বিশ্বকাপের ইউরোপিয়ান কোয়ালিফায়ারে অবিশ্বাস্য এক রাত কাটাল স্কটল্যান্ড। ডেনমার্ককে ৪-২ গোলে হারিয়ে তিন দশকের অপেক্ষা ভেঙে নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করল তারা। স্কটল্যান্ডের হয়ে গোল করেন স্কট ম্যাকটমিনে, লরেন্স শ্যাঙ্কল্যান্ড, কিয়েরান টিয়ের্নি এবং কেনি ম্যাকলিন। ডেনমার্কের হয়ে গোল দুটি করেন রাসমুস হয়লুন্দ ও প্যাট্রিক দরগু।
১৯৯৮ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপে ফিরছে স্কটল্যান্ড। ২৮ বছর পর আবারও বিশ্বমঞ্চে দাঁড়াতে চলেছে স্টিভ ক্লার্কের দল। অ্যান্ডি রবার্টসন, স্কট ম্যাকটমিনে, কিয়ারান টিয়ের্নি, জন ম্যাকগিনদের ‘সোনালী প্রজন্ম’ অবশেষে স্কটিশদের বহু প্রতীক্ষিত টিকিট এনে দিল।
হ্যাম্পডেন পার্কে তখন উৎসবের জোয়ার। বহু বছরের হতাশা ধুয়ে গেছে গ্যালারির গর্জনে। বিপরীতে ১০ জন নিয়ে লড়াই করা ডেনমার্ক ছিল হার মানা অবস্থায়, আর তাদের বিশ্বকাপ আশা এখন ঝুলছে মার্চের প্লে-অফে।
ম্যাচটিতে একাধিকবার ‘ছিটকে পড়া’র মতো পরিস্থিতিতে পড়ে স্কটল্যান্ড। গত শনিবার এথেন্সে পরাজয়ের পর বহু সমর্থকই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্য সেই হারকে পেছনে ফেলে লিখল নতুন গল্প।
রাতের শুরুটা অবশ্য অস্বস্তির ছিল স্কটল্যান্ডের জন্য। ওয়ার্ম-আপেই ইনজুরিতে মাঠ ছাড়েন জন সুটার। তাঁর জায়গায় নামেন গ্রান্ট হ্যানলি। কিন্তু খেলা শুরু হতেই মাত্র তিন মিনিটে স্কটল্যান্ডের সব অস্থিরতা উধাও।
ডানদিক দিয়ে দারুণ স্পিডে এগিয়ে ক্রস তুলে দেন বেন গ্যানন-ডোক। পজিশন কঠিন হলেও ম্যাকটমিনে আকাশে লাফিয়ে এক অবিশ্বাস্য ওভারহেড কিকে বল পাঠিয়ে দেন জালে—যা স্মেইকেল সামলানোর সুযোগই পাননি। গোলের সঙ্গে সঙ্গে হ্যাম্পডেন পার্ক ফেটে পড়ে উল্লাসে।
তবে মাত্র ২০ মিনিট পরই বড় ধাক্কা—ক্রস ব্লক করতে গিয়ে ইনজুরিতে পড়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন গ্যানন-ডোক। এরপর হয়লুন্দ গোল করলেও অ্যারন হিকিকে ফাউল করার কারণে তা বাতিল হয়। বিরতির আগে বারবার চাপ বাড়ালেও ডেনমার্ককে কোনোভাবে আটকায় স্কটল্যান্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে ডেনমার্ক পুরোপুরি আক্রমণে ঝাঁপায়। স্কটল্যান্ড মাঝেমধ্যে থামালেও বল ধরে রাখতে পারছিল না। শেষ পর্যন্ত ডেনমার্ক সমতায় ফেরে বিতর্কিত এক পেনাল্টিতে। প্রথমে রেফারি গুসটাভ ইসাকসেনের পড়ে যাওয়াকে ফাউল মনে করেননি—দেখে মনে হচ্ছিল তিনি নিজেই লাফিয়ে পড়েছেন। কিন্তু ভিএআর দেখার পর পেনাল্টি দেওয়া হয়। স্পট-কিকে গোল করেন হয়লুন্দ।
স্কটল্যান্ড শেষ পর্যন্ত ঘুরে দাঁড়ায় এবং ম্যাচের বাকি ইতিহাস তারা নিজেদের কিংবদন্তির মতোই লিখে ফেলে।
