দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টির আগে কঠিন ও দীর্ঘ অনুশীলনে ঘাম ঝরাল ভারতীয় দল। ধরমশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার টানা অনুশীলনে সূর্যকুমার যাদবদের লক্ষ্য একটাই—দ্বিতীয় ম্যাচের ৫১ রানের হার ভুলে শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনুশীলন যত এগিয়েছে, ততই দলের ভেতরের চাপ স্পষ্ট হয়েছে। ধরমশালা সাধারণত রানবন্যার মাঠ হলেও এখানে সুইং, সিম মুভমেন্ট আর বাড়তি বাউন্স—সবই থাকে। বিশেষ করে আলোয় ব্যাটিং করা কঠিন হতে পারে, সেটাই মাথায় রেখে প্রস্তুতির ছক কষেছে টিম ইন্ডিয়া।
বড় হারের পর ধরমশালায় ঘাম ঝরাল ভারত
এই কন্ডিশনে ব্যাটারদের সমস্যায় ফেলতে পারে—এ কথা মাথায় রেখে নেটে ছিল পুরোপুরি টেকনিকের ওপর জোর। পাওয়ার হিটিং নয়, বরং ধীরে খেলে বেসিক ঠিক করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
নেটে প্রথমে ব্যাট করতে নামেন ওয়াশিংটন সুন্দর। সুন্দর ও সঞ্জু স্যামসন অনুশীলন শেষ করার পর ব্যাট হাতে নামেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও সহ-অধিনায়ক শুভমান গিল। দু’জনই চারটি আলাদা নেটে ভিন্ন ভিন্ন বোলারের মুখোমুখি হন।
ধরমশালায় সূর্যকুমারের ৯০ মিনিটের ‘রিসেট’
সূর্যকুমার প্রায় ৯০ মিনিটের বেশি ব্যাটিং করেন—প্রায় একটি পূর্ণ টি-টোয়েন্টি ইনিংসের সমান সময়। অনুশীলনের ধরন ছিল অনেকটাই একাডেমি-স্টাইল—ফুটওয়ার্ক, ব্যালান্স আর শট কন্ট্রোলে জোর। শুরুতে বড় শট একেবারেই অগ্রাধিকার পায়নি।
নিজের চেনা র্যাম্প বা ঝুঁকিপূর্ণ শট এড়িয়ে গিয়ে পেসারদের বিপক্ষে সোজা ব্যাট আর কমপ্যাক্ট ডিফেন্সে মন দেন সূর্যকুমার। স্পিনারদের বিপক্ষে সুইপ ও ল্যাপ খেলতে গিয়ে মিস হলে দ্রুত মানিয়ে নেন। পাশাপাশি নিরাপদ স্কোরিংয়ের জন্য সোজা খেলা আর ইনসাইড-আউট শটের চর্চাও করেন।
চাপে থাকা গিলের পুরনো ছাঁচে ব্যাটিং অনুশীলন
অন্যদিকে, টি-টোয়েন্টিতে ফর্মহীনতায় চাপে থাকা শুভমান গিল নেটে দীর্ঘ সময় ধরে ট্র্যাডিশনাল ব্যাটিং করেন। সাম্প্রতিক সময়ে যে নতুন বলের মুভমেন্ট তাকে ভুগিয়েছে, সেটার বিরুদ্ধেই বাড়তি অনুশীলন ছিল তার।
অফ স্টাম্পের বাইরে ভালো লেন্থে বল এলে বারবার এজ পড়ছে—এই দুর্বলতা কাটাতে গিল মন দেন ব্যাকফুট পাঞ্চ, দেরিতে বল খেলা আর পাওয়ারপ্লেতে ফাঁক বের করতে আপার কাটে।
পরে হার্দিক পান্ডিয়ার সঙ্গে জিতেশ শর্মা সেন্টার উইকেটে আলোয় ছোট্ট পাওয়ার-হিটিং সেশন করেন।
বেসিকে ফিরলেন বুমরাহ, একা একা তীব্র বোলিং সেশন
এদিকে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইয়র্কার ঠিকমতো না পড়ায় জসপ্রিত বুমরাহ নেমে পড়েন আলাদা করে অনুশীলনে। সাধারণত ম্যাচের আগের দিন ঐচ্ছিক অনুশীলন এড়িয়ে চললেও এবার ব্যতিক্রম করেন তিনি।
প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে পূর্ণ গতিতে ইয়র্কার অনুশীলন করেন বুমরাহ। ব্যাটার ছিল না—শুধু কোন, স্টাম্প, ক্যামেরা আর বোলিং কোচ মোর্নে মরকেল। পুরনো বুট-অ্যান্ড-কোন ড্রিল দিয়ে নিজের অস্ত্র শানাতে ব্যস্ত ছিলেন তিনি।
দ্বিতীয় ম্যাচের ভুল শুধরে আবার ভয়ংকর হয়ে ফিরতেই এই বাড়তি খাটুনি। টেকনিক, শৃঙ্খলা আর আত্মবিশ্বাস—সব মিলিয়ে বেসিকে ফিরে ধরমশালায় কামব্যাকের ছক কষছে ভারত।
