অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের তৃতীয় অ্যাশেজ টেস্টে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে রিয়েল-টাইম স্নিকোমিটার। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো এজ-ডিটেকশন প্রযুক্তি নিয়ে তৈরি হলো তীব্র বিতর্ক, যা সিস্টেমের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

প্রথম দিন অ্যালেক্স কেরি ক্যাচ-বিহাইন্ড রিভিউতে বেঁচে যান। স্নিকোতে শব্দের স্পাইক দেখা গেলেও সেটি ভিজ্যুয়ালের সঙ্গে মিলছিল না। প্রমাণ অস্পষ্ট থাকায় ইংল্যান্ডের আবেদন খারিজ হয় এবং কেরি ব্যাটিং চালিয়ে যান। পরে তিনি সেঞ্চুরি করেন।

এরপর স্নিকোমিটার পরিচালনাকারী সংস্থাস্বীকার করে, রিভিউয়ের সময় ভুল স্টাম্প মাইক ব্যবহার করা হয়েছিল—যার ফলে সিদ্ধান্তে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঘটে।

‘স্নিকো বাতিল করা উচিত’—মিচেল স্টার্ক

ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে আরেক বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর স্নিকোকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার মিচেল স্টার্ক।

অ্যাডিলেড ওভালের শেষ সেশনে স্টাম্প মাইকে ধরা পড়ে স্টার্কের মন্তব্য। তিনি বলেন, প্রযুক্তিটি একেবারেই বাজে এবং টানা দুই দিন ভুল করেছে।

“স্নিকো বাতিল করা উচিত। এটা সবচেয়ে খারাপ প্রযুক্তি। আগের দিন ভুল করেছে, আজও করেছে,” বলেন স্টার্ক।

এই মন্তব্য আসে এমন এক ঘটনার পর, যেখানে আম্পায়াররা সিদ্ধান্ত নিতে থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠান—ইংল্যান্ড ব্যাটার জেমি স্মিথ কি উসমান খাজার হাতে ক্যাচ হয়েছিলেন কি না তা যাচাই করতে।

জেমি স্মিথ বাঁচলেন, নতুন করে বিতর্ক

ইংল্যান্ডের ইনিংসে প্যাট কামিন্স–এর শর্ট বল হুক করতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েন জেমি স্মিথ। ব্যাটে লাগেনি, বল উঠে যায় প্রথম স্লিপে থাকা উসমান খাজার দিকে।

অস্ট্রেলিয়ার দাবি ছিল, বলটি গ্লাভসে লেগে খাজার কাছে গেছে। অন-ফিল্ড আম্পায়াররাও সন্দেহে সিদ্ধান্ত থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠান।

রিপ্লে ও স্নিকো ইঙ্গিত দেয়, বলটি গ্লাভস নয়, হেলমেটে লেগে থাকতে পারে। উপরন্তু, বলটি খাজার কাছে যাওয়ার আগে মাটিতে পড়েছিল কি না—তা নিয়েও ছিল অনিশ্চয়তা। একাধিক রিপ্লে দেখার পরও থার্ড আম্পায়ার নট আউট দেন। স্মিথ ১৬ রানে বেঁচে যান, অস্ট্রেলিয়ানরা ক্ষুব্ধ হন, আর স্নিকোর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক আরও জোরালো হয়।

অস্পষ্ট প্রমাণেও আউট—ইংল্যান্ড ক্ষুব্ধ

পরে আরেক ঘটনায় জেমি স্মিথ অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বলে পুল শট খেলতে যান। বল চলে যায় উইকেটকিপার অ্যালেক্স কেরির কাছে, ক্যাচ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ার আবেদন। অন-ফিল্ড আম্পায়ার নিতিন মেনন সিদ্ধান্ত থার্ড আম্পায়ারের কাছে পাঠান। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল কেরির কাছে পৌঁছেছে।

স্নিকোতে স্পষ্ট স্পাইক দেখা গেলেও স্লো-মোশনে ব্যাট ও বলের মধ্যে ফাঁক দেখা যাচ্ছিল। তবু থার্ড আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফানি স্নিকোর ওপর ভরসা করে স্মিথকে ক্যাচ-বিহাইন্ড আউট দেন।

সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট ছিলেন না স্মিথ—মাথা নেড়ে ফিরেন। নন-স্ট্রাইকার এন্ডে থাকা বেন স্টোকসও ছিলেন দৃশ্যত ক্ষুব্ধ। এই মুহূর্তটি তুলনা টানে আগের দিনের অ্যালেক্স কেরির বেঁচে যাওয়ার ঘটনার সঙ্গে—যেখানে একই স্নিকো ইস্যু অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেই গিয়েছিল।

 

news