ইনার ইয়ার সমস্যায় ভোগার পর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে এমসিজিতে চতুর্থ টেস্টে ফিরছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ ব্যাটার স্টিভ স্মিথ। মাঠে ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই আবার আলোচনায় তিনি—এবার ইংল্যান্ডের গতিতারকা জোফ্রা আর্চারকে নিয়ে প্রকাশ্য কটাক্ষ করে। বক্সিং ডে টেস্টে আর্চারের মুখোমুখি হতে না পারার আক্ষেপও ঝরেছে স্মিথের কণ্ঠে।

অ্যাডিলেডে অ্যাশেজ সিরিজ জিতে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আগেই জানানো অনুযায়ী, অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এমসিজির বক্সিং ডে টেস্টে খেলছেন না। তার বদলে ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক হিসেবে দলে ফিরছেন স্টিভ স্মিথ, যিনি অ্যাডিলেড টেস্ট মিস করেছিলেন এক অদ্ভুত শারীরিক জটিলতার কারণে।

স্মিথের নেতৃত্বেই পার্থ ও ব্রিসবেনে সিরিজের প্রথম দুই টেস্ট জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে এখন লাল বলের ক্রিকেটেই পুরো মনোযোগ দিচ্ছেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।

জোফ্রা আর্চারকে খোঁচা স্মিথের

গাব্বা টেস্টের শেষ দিকে জোফ্রা আর্চার ও স্টিভ স্মিথের মধ্যে উত্তেজনাকর মুহূর্ত দেখা যায়। বিশেষ করে স্মিথ ছিলেন বেশ চটেছিলেন। ম্যাচ শেষ করার পথে আর্চারকে টেনে ও হুক করে এক চার ও এক ছক্কা হাঁকান তিনি। মাত্র ৯ বলে ২২ রানে অপরাজিত থেকে অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন স্মিথ।

অ্যাডিলেড টেস্টে স্মিথ না থাকলেও আর্চার ছিলেন দুর্দান্ত ফর্মে, প্রথম ইনিংসে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। কিন্তু এবার এমসিজি ও এসসিজি—দুটো টেস্টেই আর্চারের মুখোমুখি হওয়া হচ্ছে না স্মিথের। পার্শ্বদেশের চোটে সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন ইংলিশ পেসার।

স্মিথ স্বীকার করেছেন, গত সপ্তাহে আর্চার ভালো বোলিং করেছেন। তবে সঙ্গে যোগ করেন, লাল বলের ক্রিকেটে আর্চার কখনও তাকে আউট করতে পারেননি। কোড স্পোর্টসকে স্মিথ বলেন,
“হ্যাঁ, এখনও আমাকে আউট করতে পারেনি।”

তিনি আরও বলেন, “দুঃখের বিষয়, পরের কয়েকটা ম্যাচে ওকে পাওয়া যাবে না। তবে ইংল্যান্ড দলে এখনো বেশ কিছু মানসম্মত পেসার আছে, যারা ক্ষতি করতে পারে।”

২০২৭ অ্যাশেজ চোখে স্মিথের, অবসর ভাবনায় নেই

১০ হাজারের বেশি টেস্ট রান করা স্টিভ স্মিথের বয়স ৩৬ পেরিয়েছে। তবে ফিটনেস, রিফ্লেক্স আর ব্যাটিং ফর্মে অবসরের কোনো ইঙ্গিত নেই।

ক্রিসমাসের আগে দেওয়া এক বক্তব্যে স্মিথ স্পষ্ট জানান, ২০২৬–২৭ সালের অ্যাশেজ পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেট চালিয়ে যেতে চান তিনি। দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও একটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতা স্মিথ এবার চোখ রেখেছেন ২০২৭ সালে দ্বিতীয় আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের দিকে—যদি এই ডব্লিউটিসি চক্রে অস্ট্রেলিয়া নিজেদের দুর্দান্ত ফর্ম ধরে রাখতে পারে।

বেন স্টোকসদের নিয়ে সহানুভূতি, নুসা ভ্রমণ নিয়ে স্মিথের সাফাই

ইংল্যান্ড দলকে নিয়ে অপ্রত্যাশিতভাবে সহানুভূতিও দেখিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক। স্মিথ বলেন, বড় ব্যবধানে ম্যাচের ফাঁকে খেলোয়াড়দের একটু বিরতি নেওয়া দরকার। অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে থাকলে বাইরে গিয়ে সময় কাটানো দলের মানসিক সতেজতার জন্য জরুরি।

তিনি বলেন,
“কখনো কখনো খেলা থেকে একটু দূরে সরে গিয়ে মাথা ঠান্ডা করা দরকার। অনেকেই মন্তব্য করেছে, কিন্তু আমার মনে হয় মাঝে মাঝে খেলাটাকে কিছু সময়ের জন্য ভুলে থাকা ভালো।”

স্মিথ জানান, বিরতি নেওয়া নিয়ে তার কোনো আপত্তি নেই।
“দুটি টেস্ট হেরে গেলে এবং বড় বিরতি থাকলে, পুরোপুরি সুইচ অফ করাই অনেক সময় সেরা সিদ্ধান্ত,”—এভাবেই বক্তব্য শেষ করেন তিনি।

 

news