কলকাতার দোকান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংস্থাকে সতর্ক করলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনি জানিয়েছেন, যদি প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলায় সাইনবোর্ড না রাখে, তাহলে তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।

পুরসভা ৩০ আগস্ট একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছিল, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ডে নামের ওপরের অংশে অবশ্যই বাংলায় লেখা থাকতে হবে। অন্যান্য ভাষায় নাম লেখা যাবে, তবে বাংলা বাধ্যতামূলক। মেয়রের নির্দেশ অনুযায়ী, যেহেতু ৩০ সেপ্টেম্বর দুর্গাপূজোর অষ্টমীর দিন, তাই উৎসব চলাকালীন সময় কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। তবে দুর্গাপুজোর পর আইন কার্যকর করা হবে।

মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “যেসব দোকান বা প্রতিষ্ঠান বাংলায় নাম লেখে না, তাদের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।”

এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা। সম্প্রতি ভারতের কয়েকটি রাজ্যে বাংলা ভাষাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর হামলার ঘটনা রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি করেছে। সেই প্রেক্ষাপটে তৃণমূল বাংলা ভাষার স্বীকৃতি ও মর্যাদা রক্ষায় সক্রিয় হয়েছে। পুরসভা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই নতুন নির্দেশিকায় বাংলা ব্যবহারের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।

মেয়রের এই বক্তব্যের পরই শহরের ব্যবসায়ী মহলে আলোচনার জন্ম হয়েছে। অনেকের মতে, বাংলাকে অগ্রাধিকার দেওয়া স্বাভাবিক ও যৌক্তিক। তবে কিছু ব্যবসায়ী মনে করছেন, হঠাৎ করে এই নির্দেশিকা কার্যকর হলে তাদের বাড়তি চাপ পড়বে। বিশেষ করে পুরনো সাইনবোর্ড বদলাতে সময় ও খরচ উভয়ই লাগবে।

ফিরহাদ হাকিম বলেন, “এই পদক্ষেপ অন্য ভাষাকে অসম্মান করার উদ্দেশ্যে নয়। বাংলায় নাম লেখা মানে হিন্দিকে অসম্মান করা নয়। বাংলা এই শহরের প্রাণ। সরকারি হোক বা বেসরকারি, সর্বত্র বাংলার মর্যাদা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”

পুরসভার কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, কলকাতা পৌর আইন সরাসরি ট্রেড লাইসেন্স বাতিলের ক্ষমতা দেয় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। একজন কর্মকর্তা জানান, আইন অনুযায়ী দোকান মালিকরা কমিশনারের অনুমতি নিয়ে নামবোর্ড বসাতে পারেন, কোন ফি দেওয়া লাগে না। কিন্তু অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এই নিয়ম মানে না। ফলে বাংলা সাইনবোর্ড না থাকলে অনুমতিই বাতিল হবে, যা ব্যবসায়ীদের বাধ্য করবে নির্দেশিকা মানতে।

 

news