নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (এনএসইউ) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির প্রভাব নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। "বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক: চ্যালেঞ্জ নাকি সুযোগ" শীর্ষক এই লেকচারে বক্তারা বাংলাদেশের জন্য সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি নতুন সম্ভাবনার দিকগুলো নিয়ে আলোকপাত করেন।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন তাঁর মূল বক্তব্যে বলেন, "মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত রপ্তানিনির্ভর বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তবে ৯০ দিনের বিরতির প্রস্তাব আমাদের সাময়িক স্বস্তি দিয়েছে। এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের কৌশলগতভাবে এগোতে হবে।" তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শুল্ক ছাড় চুক্তি এবং ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (টিফা) বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্সের ডিন অধ্যাপক এ কে এম ওয়ারেসুল করিম বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য নীতি পুনর্বিবেচনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠার সুযোগ রয়েছে। আমাদের শুধু ন্যায্য শুল্ক নীতিই নয়, বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে।"

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক আবদুর রব খান সতর্ক করে বলেন, "বর্তমান শুল্ক নীতি অব্যাহত থাকলে শুধু আমেরিকাই নয়, গোটা বিশ্বই আরেকটি অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি হতে পারে।" স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সের ডিন অধ্যাপক মো. রিজওয়ানুল ইসলাম বাংলাদেশের জন্য এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখার পরামর্শ দেন। তাঁর মতে, "শ্রমঘন পণ্যের পাশাপাশি আমাদের সেবা খাতের রপ্তানিতে মনোযোগ দিতে হবে। প্রযুক্তি ও দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এই চ্যালেঞ্জকে সুযোগে পরিণত করতে পারি।"

এই আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, মার্কিন শুল্ক নীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে বহুমুখী কৌশল নিতে হবে। একদিকে যেমন বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তিগুলো কাজে লাগাতে হবে, অন্যদিকে নতুন বাজার সন্ধান এবং পণ্য বৈচিত্র্য আনতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করার একটি সুযোগ হিসেবে কাজে লাগানো সম্ভব।

#এনএসইউ_লেকচার #মার্কিন_শুল্ক_চ্যালেঞ্জ #বাংলাদেশ_অর্থনীতি #বাণিজ্য_কৌশল #টিফা_চুক্তি

news