ইরানে স্কুল ছাত্রীদের ওপর বিষপ্রয়োগ জঘন্যতম অপরাধের দৃষ্টান্ত

ইরানের ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা স্কুলে ছাত্রীদের ওপর বিষ প্রয়োগের ঘটানকে একটি বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এর কোনো ক্ষমা নেই। তিনি বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন অপরাধীদের অবশ্যই কঠোর শাস্তি পেতে হবে।

আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী এই বিষ প্রয়োগের ঘটনাকে সমাজের সবচেয়ে নিরপরাধ শ্রেণী অর্থাৎ কোমলমতি শিশুদের বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। এই ঘটনা সমাজের মানসিক নিরাপত্তাহীনতা এবং পরিবারের জন্য উদ্বেগজনক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। সর্বোচ্চ নেতা অত্যন্ত কঠোরভাবে বলেন, প্রত্যেকেরই জেনে রাখা উচিত যে-কেউই এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে চিহ্নিত হবে এবং দোষী সাব্যস্ত হবে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যেই শাস্তি দেখে অন্যরাও শিক্ষা নিতে পারবে। তিনি এ ব্যাপারে জোর তদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

বর্তমানে, ইরানের কিছু স্কুলে শিক্ষার্থীদের ওপর বিষক্রিয়ার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যা কিনা জনমনে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রথম বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগের ঘটনাটি ঘটে গত ডিসেম্বরে ধর্মীয় নগরী কোমে মেয়েদের একটি স্কুলে। এরপর, এই শহরের অন্যান্য স্কুল এবং ইরানের অন্যান্য শহরের বেশ কয়েকটি স্কুলের ছাত্রীর মধ্যে বিষক্রিয়ার ঘটনা সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। অবশ্য বিষক্রিয়ার আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। বেশিরভাগকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় এবং যাদের বেশি চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল তাদের ৪৮ ঘন্টার কম সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সুস্থ হলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।

জনগণের নিরাপত্তা বিধান ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা ইসলামি ইরানে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পায়।  এ ঘটনার পরপরই গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার জন্য ব্যাপক তদন্ত শুরু করে এবং এ প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে। তারপরও শুরু থেকেই শত্রুরা ঘটনার তদন্তে ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থাকে অক্ষম প্রমাণ করার চেষ্টা করে এবং মিথ্যা দাবি ও মনস্তাত্ত্বিক প্রচারণা চালিয়ে সমাজে ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়।

জনগণের জীবন মাল রক্ষায় অতীতে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে এবং শিক্ষাঙ্গনসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণের নিরাপত্তা বিধান ও সুস্থতা বজায় রাখতে কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ প্রথম যখন ইরানে মহামারী করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল তখন ইরান জুড়ে ব্যাপাকে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছিল। এ সময় ইরানের সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা করোনা রোধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল এবং চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি ঘরে আবদ্ধ মানুষের দুয়ারে গিয়ে খাবার পৌঁছে দিত। এমনকি ইরানের বিজ্ঞানীরা নিজেরাই করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে করোনায় মৃত্যু শূন্যে কোটায় পৌঁছেছে।

যাইহোক, ইরানের কিছু স্কুলে বিষক্রিয়ার ঘটনা খুবই অমানবিক এবং এ বিষয়ে জোর তদন্ত চলছে এবং তদন্তের ফলাফল শিগগিরি প্রকাশ করা হবে।  
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২৩/এক

news