কায়রোর মিসর ও তুরস্কের সম্পর্কের অগ্রগতি : পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক

 মিসরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সামেহ শুকরে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসওগলুকে বলেছেন, ‘উপযুক্ত সময়ে দুদেশের মধ্যে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সম্পর্ক পুণ:প্রতিষ্ঠা করা হবে। এ দশক আগে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা সৃষ্টির পর গত শনিবার দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা প্রথম বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠকে পর এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে কাবুসওগলু বলেন, সম্ভব শিগগিরই তারা রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবেন। তিনি বলেন, ‘সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে আমরা বাস্তব পদক্ষেপ নিতে পেরেছি, এতে আমি আনন্দিত। আমরা ভবিষ্যতে সম্পর্ক আরো জোরদার করার আশা করছি। শুকরে বলেন, ‘আলোচনার ফলাফলের ওপর নির্ভর করে আমরা উপযুক্ত সময়ে রাষ্ট্রদূত পর্যায়ে সম্পর্ক স্থাপন করবো।’

তৎকালীন সেনাপ্রধান জে:  আব্দুল ফাত্তাহ আলসিসি মিসরের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ও মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতা মুহাম্মাদ আল-মুরসিকে উৎখাত করার পর তুরস্ক ও মিসরের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। ২০১৩ সালে সিসি মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। মুরসি ছিলেন প্রেসিডেন্ট এরদোগানের ঘনিষ্ঠজন।

ডলবিয়ার সংঘাতেও মিসর ও তুরস্ক পরস্পর বিরোধী পক্ষের সমর্থন জানায়। ভুমধ্যসাগরের গ্যাস সম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলের পানি সীমা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে।

পরস্পর সম্পর্কিত দুটি বিষয় নিয়ে আংকারা-কায়রোর মধ্যকার বিরোধ এখনো নিস্পত্তি হয়নি। প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও দু’দেশের সম্পর্ক এখনো নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তাহলো লিবিয়ায় বিরোধী পক্ষকে সমর্থন এবং ভুমধ্যসাগরের সীমানা নিয়ে বিরোধ। তুরস্ক লিবিয়ার ত্রিপোলির জাতিসংঘ সমর্থিত সরকারকে আর মিসর বেনগাজি ভিত্তিক যুদ্ধবাজ জেনারেল খলিফা হাফতারকে সমর্থন দিচ্ছে।

২০১১ সালে ন্যাটোর সহায়তায় লিবিয়ায় মোয়াম্মার গাদ্দাফীকে উৎখাত ও হত্যা করার পর তেল সমৃদ্ধ ধনাঢ্য দেশ লিবিয়ায় অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ২০১৪ সালে দেশটি পশ্চিমাঞ্চলীয় ও পূর্বাঞ্চলীয় দু’ প্রতিপক্ষের সংঘাতে অশান্ত হয়ে রয়েছে। ২০১৯ সালে ভূমধ্যসাগরীয় গ্যাস ফোরাম গঠিত হয়। তুরস্ককে এ ফোরামের বাইরে রাখা হয়। এর জবাবে তুরস্ক ত্রিপোলি সরকারের সাথে একটি সমুদ্র সীমা চুক্তি করে। তুরস্ক ২০২১ সালে মিসর, আরব আমিরাত, ইসরায়েল ও সৌদি আরবের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পদক্ষেপ নেয়। সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে তুরস্ক সেখান থেকে প্রচারিত বিরোধী দলের টিভিতে মিসর সরকারের সমালোচনা হ্রাস করার পরামর্শ দেয়।

এনবিএস/ওডে/সি

news