নওরোজ উৎসবকে কেন্দ্র করে ইরানে কেনাকাটার ধুম

ইরানের নওরোজ বিশ্বের প্রাচীন উৎসবগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রাচীন ইরান বিস্তৃত ছিল মধ্য এশিয়া ও ককেশাস অঞ্চল থেকে ভারতবর্ষ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর-আফ্রিকার এক বিশাল অঞ্চলে। তাই এইসব অঞ্চলের অন্যতম প্রধান উৎসব হল এই নওরোজ।

জাতিসংঘের সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো ২০১০ সালে নওরোজ উতসবকে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকাভুক্ত করে। ওই সংস্থা নওরোজ উৎসবের প্রথম দিন তথা ২১ মার্চকে বিশ্ব নওরোজ উৎসব হিসেবে ঘোষণা করেছে।


নওরোজ উৎসবের প্রাক্কালে কেনাকাটার ধুম পড়ে যাওয়াও লক্ষণীয়। সাধারণত এ সময় বেশি বেশি কেনা হয় পোশাক, আজিল নামে পরিচিত শুকনো ফল ও বুট-বাদামের মিশ্রণ,  তাজা ফল, মিষ্টি ও ঘরবাড়ীর কোনো কোনো সামগ্রী ইত্যাদি। নতুন বছরে সবাই নতুন পোশাক পরতে আগ্রহী। এ ছাড়াও তারা মেহমানকে আপ্যায়নের জন্য সবচেয়ে ভালো খাবার কিনতে চান। ফলে ব্যবসায়ীদের জন্যও এই সময়টা খুব ভালো কাটে।


ইরানিরা নওরোজের সময় ঘরের মধ্যে ৭টি আইটেম সাজিয়ে রাখে। এই সাতটি আইটেমকে বলা হয় হাফত সিন। ‘হাফতসিন’ অর্থ সাতটি‘সিন’। ওই সাতটি জিনিষের নামের প্রথম অক্ষর ফার্সি বা আরবী বর্ণমালার ‘সিন’ অক্ষর দিয়ে শুরু হওয়ায় সেগুলোকে এ নাম দেয়া হয়েছে। এ ৭টি সামগ্রী হল, ‘সাবজে’ বা গম বা ডালের সবুজ চারা, সামানু বা গমের চারা দিয়ে তৈরি করা খাবার, সিব বা আপেল, ‘সেনজেদ’ নামের একটি বিশেষ ফল, ‘সোমাক্ব’ নামক বিশেষ মশলা, সির বা রসুন এবং সের্কে বা সিরকা।


এসব সামগ্রী হল নব-জীবন, প্রবৃদ্ধি, ফলবান হওয়া, প্রাচুর্য, সৌন্দর্য, সুস্থতা, ভালোবাসা, আনন্দ ও ধৈর্য প্রভৃতির প্রতীক। এ ছাড়াও নওরোজের এ দস্তরখানে ডিম, ফুল, আয়না, পানি, লাল রংয়ের ছোট মাছ ও ধাতব মুদ্রা রাখা হয়। এসবেরই রয়েছে বিশেষ অর্থ।


ফুল ও সবুজ কিশলয় আনন্দ ও নব-জীবনের প্রতীক। প্রকৃতিতে নব-জাগরণের বার্তা নিয়ে আসে বসন্ত। চারদিকে ফুলের সমারোহ এটাই মনে করিয়ে দেয় যে কেবল প্রকৃতি নয় মানুষের মনও হওয়া উচিত ফুলের মত সুরভিত ও সুন্দর।
খবর পার্সটুডে/ এনবিএস ২০২০/একে

news