হাতির জন্য খাদ্যভাণ্ডার হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে, মিলবে ৩৯ রকমের খাবার
কলাগাছ, পছন্দের কিছু ঘাস এবং বিভিন্ন ধরনের গাছের সংকটের কারণে জঙ্গল থেকে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে বলে মনে করেন পশ্চিমবঙ্গের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি জানান, এ ব্যাপারে বন দপ্তর একটি সমীক্ষা শুরু করেছে রোববার থেকে। জলপাইগুড়ি, শিঁলিগুড়ি এবং বাগডোগরা জঙ্গল এলাকায় এই সমীক্ষা চালানো হবে। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় সমীক্ষাটি চালানো হবে বলে বনদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে।
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রাজ্যে হাতির সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তাই হাতির খাবারের জন্য উন্নত প্রযুক্তিতে খাদ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। এ সম্পর্কিত প্রাথমিক পর্যায়ে পরিকল্পনা ইতোমধ্যে হয়ে গিয়েছে।’ জঙ্গল সংলগ্ন এই খাদ্যভাণ্ডারগুলোতে থাকবে কলা, তরমুজ, চালতা, মৌসুমি সবজিসহ মোট ৩৯ রকম খাদ্য, থাকবে পানীয় জলের ব্যবস্থা।
আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, খাদ্যভাণ্ডার তৈরির পাশাপাশি হাতিদের যাতায়াতের জন্য মোট ১৪টি করিডোর তৈরির পরিকল্পনাও হাতে নেওয়া হয়েছে। সেসবের মধ্যে ৭টি করিডোরের কাজ শুরু হবে শিগগিরই। এক একটি করিডোর প্রায় সাত আট কিলোমিটার লম্বা হবে।
মূলত, পার্শ্ববর্তী ঝাড়খণ্ড থেকে খাবারের খোঁজে হাতির দল প্রায়ই পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি জেলায় প্রবেশ করে। মাঝেমধ্যে তারা লোকালয়েও ঢুকে যায়। বিশেষ করে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কিছু জঙ্গল অধ্যুষিত জেলায় মাঝেমধ্যেই হাতির উপদ্রব দেখা যায়। হাতিদের কারণে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয় এবং এই ব্যাপারটিকে ঘিরে মানুষ ও হাতির মধ্যে সংঘাত দিন দিন বাড়ছে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে।
রাজ্য সরকারের বনদপ্তর গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, বনাঞ্চলেই যেন হাতি পর্যাপ্ত খাদ্যের জোগান পায় তার জন্য প্রাথমিকভাবে পাঁচটি এলাকায় খাদ্যভাণ্ডার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনটি এলাকা নির্বাচনও করা হয়েছে। এগুলো হলো লালগড়, বেলপাহাড়ি ও তপোবনের জঙ্গল। সেখানে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বৈদ্যুতিক তারের সুরক্ষার ভিতরে থাকবে হাতির খাবারের ব্যবস্থা, তৈরি করা হবে জলাশয়ও। বনমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই বন্যপ্রাণ রক্ষা হোক, মানুষও নিরাপদে থাকুক। সে কারণেই এই দুই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
এনবিএস/ওডে/সি