চীনারা মনে করেন ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা অন্যায়
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রথম হামলা ও গোলাবর্ষণের ছবি দেখার পর লিউ-ওয়েন ফাংএর চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। ২৬ বছর বয়েসী চীনা নারী লিউ কিয়েভের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে রুশ ও ইউক্রেনের ভাষার ওপর লেখাপড়া করেন ২০১৮ সালে।
এ সময়ে তিনি কিয়েভ ও এর জনগণকে ভালবেসে ফেলেন। ফাং নগরীর নদীর পাড়ে প্রবাহমান বাতাসের মধ্যে হেটে বেড়ানো এবং পার্কসহ দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরে বেড়ানোর স্মৃতিচারণ করেন। সেখানকার আকর্ষণীয় হোটেল ও বারগুলোতে বন্ধুদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আড্ডায় মিলিত হতেন, পানাহার করতেন যা কখনো ভুলার নয়। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সেগুলো এখন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ফ্যাং সাংহাইয়ের বাড়ি থেকে আল-জাজিরাকে বলেন, একসময় যে নগরী আমার আবাসস্থল ছিল তা এখন বিধ্বস্ত যুদ্ধ অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। এটি খুবই বেদনাদায়ক। ইউক্রেনে হামলার আগে ফাং রাশিয়া ও প্রেসিডেন্ট পুতিন সম্পর্কে অত্যন্ত ইতিবাচক ধারণা পোষণ করতেন যা এখন সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি যা দেখেছি এবং ইউক্রেনের বন্ধুদের থেকে শুনেছি যে রুশ হামলায় তাদের জীবন একেবারে বিধ্বস্ত হয়েছে। পুতিনের সম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের শিকার হয়েছে ইউক্রেন। এতে রাশিয়া ও পুতিনের ওপর থেকে আমার সব সমর্থন ও শ্রদ্ধা উঠে গেছে।’
চীনের কঠোর নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ও ইউক্রেন বিশেষকরে ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে দেশটির নীতির প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার ব্যাপারে ফাংএর সমালোচনা মন্তব্য বিরল ঘটনা।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এ যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও পুতিন সম্পর্কে চীনাদের মনোভাব প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
চীনের মধ্যাঞ্চল চেংদু প্রদেশের হসিয়া-লিয়াং হাও(৪১) সম্প্রতি রাশিয়া ও পুতিন সম্পর্কে তার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করেছেন। বহু বছর যাবত তারা রাশিয়াকে ন্যাটো ও পাশ্চাত্যের বিরুদ্ধে একটি সামরিক শক্তি এবং পুতিনকে একজন শক্তিশালী ও বুদ্ধিমান নেতা বলে মনে করে আসছিলেন। তবে গত এক বছরের বেশি সময়ে ধরে ইউক্রেনে যুদ্ধ চলার পরও রাশিয়া চূড়ান্ত কোনো বিজয় লাভ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
হাও বলেন, তিনি বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন যে, এ যুদ্ধ রাশিয়ার শক্তিমত্তা নয়, বরং দেশটির দুর্বলতার প্রকাশ করে দিয়েছে।
এনবিএস/ওডে/সি


