স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতার বিরুদ্ধে চীনের হুঁশিয়ারি

চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু বলেছেন, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতার পুণরুজ্জীবিত করা হচ্ছে। তবে বেইজিং সংঘাত নয় সংলাপ চায়। সিঙ্গাপুরে শাংরি-লা ডায়ালগের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে অস্বীকার করার পর তিনি এ মন্তব্য করলেন।

গত শুক্রবার সিঙ্গাপুরে শুরু হয়েছে তিন দিনের ‘সাংগ্রি-লা-ডায়ালগ’ প্রতিরক্ষা সম্মেলন। এশিয়ার এ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সম্মেলনে রোববার বক্তৃতাকেকালে লি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত করে পরিচিত ক্ষোভের পুণরাবৃতি করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘কয়েকটি দেশ’ অস্ত্রপ্রতিযোগিতা জোরদার করেছে এবং অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।

চীনা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতা এখন পুণরুজ্জীবিত করা হয়েছে। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি মারাত্মক বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, পারস্পারিক শ্রদ্ধাকে হুমকি-ধমকি ও আধিপত্যে বিস্তারের উপরে প্রাধান্য দিতে হবে।

রাশিয়ার প্রধান অস্ত্র রপ্তানিকারক কোম্পানি বোসোবরোনেক্সপোর্ট থেকে জঙ্গী বিমান ও সরঞ্জাম কেনার কারণে পিপলস লিবারেশন আর্মির জেনারেল লি’র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র ২০০৮ সালে।

লি সংলাপের শ্রোতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, তাইওয়ানকে চীন থেকে বিচ্ছিন্ন করার তাওয়ানের স্বাধীনতাকামী শক্তি বা বাইরের কোন শক্তির চেষ্টাকে তারা বরদাশত করবেন না। চীন বিচ্ছিন্ন স্বশাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে তার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং তাইওয়ানকে প্রয়োাজনে শক্তিপ্রয়োগের মাধ্যমে হলেও কম্যুনিষ্ট পার্টি শাসিত চীনের মূলভূখন্ডের সঙ্গে পুণরায় সংযুক্ত করার লক্ষ্য ঘোষনা করেছেন।

মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন গত শনিবার চীনের সমালোচনা করে বলেন, সংঘাত সৃষ্টি হতে পারে, এমন ভুল-বোঝাবুঝি এড়াতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে সংলাপ অত্যাবশ্যক। চীনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর ক্ষুব্ধ লয়েড এ মন্তব্য করেন।

সম্মেলনের রাতের খাবার অনুষ্ঠানে অবশ্য লয়েড ও শাংফু প্রথমবারের মতো হাত মেলান ও সংক্ষিপ্ত কথাবার্তা বলেন। পেন্টাগনের পক্ষ থেকে আরও দীর্ঘ সময় আলোচনার প্রত্যাশা করা হয়েছিল।

অস্টিনের বক্তব্যের দ্রুত জবাব দিয়েছেন চীনের প্রতিনিধিরা। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যাং হেফেই বলেন, ‘পেন্টাগনপ্রধান তার বক্তব্যে একাধিক মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। আমরা এর বিরোধিতা করি।’ চীনের আরেক কর্মকর্তা ঝাও সিয়াওঝো বলেন, ‘চীন কী করবে, তা বলে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই ওয়াশিংটনের। চীনা সেনাবাহিনীতে আমরা যা করি, তা চীনের নিরাপত্তার স্বার্থ বজায় রেখে করা হয়। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা’

এনবিএস/ওডে/সি

news