লিবিয়ায় নিহত বেড়ে ১১ হাজার ৩০০, গলিত মরদেহে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা

লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট বৃহস্পতিবার নিহত ও নিখোঁজের এ সংখ্যা জানায়। নিখোঁজ মানুষের খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ ও স্বজনেরা। বাঁধ ভেঙে সুনামির মতো ব্যাপক বন্যায় প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় উপকূলীয় পাহাড় ঘেরা শহর দারনা। অনেকের মরদেহ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ফলে উদ্ধার না হওয়া গলিত মরদেহগুলো থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে লাশ গণকবর দেওয়া হচ্ছে। 

আন্তর্জাতিক এই সাহায্য সংস্থা রেড ক্রস-রেড ক্রিসেন্ট এর সেক্রেটারি-জেনারেল মারি এল-ড্রেস ফোনে বলেছেন, দারুন শহরে আরও ১০ হাজার ১০০ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

গত রোববার অস্বাভাবিক শক্তিশালী ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল পূর্ব লিবিয়াজুড়ে বিস্তৃত এলাকায় মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি করে। 
ওই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। দেরনায় বন্যায় বহু ভবন বিধ্বস্ত হয় এবং স্রোতের তোড়ে সমুদ্রে ভেসে যায় সেখানকার  হাজার হাজার মানুষ।

হারিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সন্ধানে ধ্বংসস্তূপে খোঁজাখুঁজি করছেন তাদের স্বজনরা। এমনই একজন হলেন গাড়িচালক উসামা আল হুসাদি (৫২)। তিনি তার নিখোঁজ স্ত্রী ও পাঁচ সন্তানকে খুঁজছেন ঝড়ের পর থেকে। চোখের অশ্রু মুছতে মুছতে হুসাদি বলেন, ‘আমি হেঁটে হেঁটে সন্তানদের খুঁজছি। আমি সব হাসপাতাল ও স্কুলে গিয়েছি কিন্তু কোথাও তাদের পাইনি।’ 

দারনার মেয়র বলেন, ‘বিভিন্ন ধ্বংসস্তূপ ও পানির নিচে যেসব মরদেহ পড়ে আছে, সেগুলো থেকে রোগ ছড়াতে পারে। এতে শহরে মহামারি ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেরনায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগই হয়তো এড়ানো যেত। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্রধান পেটেরি তালাস বলেন, ‘যদি স্বাভাবিক কোনও অপারেটিং আবহাওয়া পরিষেবা থাকলে তারা সতর্কতা জারি করতে পারত এবং কর্তৃপক্ষ লোকদেরকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হতো।’

দারনা শহরের উদ্ধার কাজে ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে কয়েকটি দল সেখানে গিয়েছে। মিসর, তিউনিসিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক ও কাতারের উদ্ধারকর্মীরা সেখানে কাজ শুরু করেছেন। দারনার মেয়র বলেন, সেখানে অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপনে তুরস্ক একটি জাহাজে করে সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে।

লিবিয়ায় রাজনৈতিক সংকট উদ্ধার কাজে গতি সঞ্চারে অন্তরায় হয়ে আছে। লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে ২০১১ সালে হত্যার পর থেকেই দেশটিতে দুটি সরকার রয়েছে। সূত্র: ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা

এনবিএস/ওডে/সি

news