বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইহুদিবাদী ইসরাইলের তীব্র আগ্রাসনের মধ্যেও ইরানের সংসদ মসলিশে শুরায়ে ইসলামির স্পিকারের লেবানন সফরকে একটি সাহসী ও নজিরবিহীন কাজ বলে অভিহিত করেছে।

ইরানের সংসদ স্পিকার "মোহাম্মদ বাকের কলিবফ"-এর এ ধরনের সাহসী পদক্ষেপ, নিজে বিমান চালিয়ে লেবাননে যাওয়া এবং সেদেশে ইসরাইলের বর্বর হামলার মধ্যে বৈরুতে অবতরণ করা বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। কেননা তেলআবিবের হুমকি উপেক্ষা করে তিনি ব্যাপক সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বৈরুত গেছেন। পার্সটুডে-এর মতে, গণমাধ্যমগুলো ছাড়াও, সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী অনেক আরবিভাষী মোহাম্মদ বাকের কলিবফের এ সহসী সফর এবং লেবাননের প্রতি ইরানের সমর্থনের প্রশংসা করেছেন।

ইসরাইলের সহযোগী হিসাবে পরিচিতি সৌদিআরবের আল আরাবিয়া নিউজ চ্যানেল ইরানের সংসদ স্পিকারের এই ভ্রমণের একটি ভিডিও প্রকাশ করে লিখেছে: এটা খুবই বিস্ময়ের ব্যাপার যে, স্পিকার কলিবফ নিজে বিমান চালিয়ে লেবানন সফরে গেছেন। লেবাননে পৌঁছে তিনি বৈরুতের প্রাণকেন্দ্রে ইসরাইলি আগ্রাসনের স্থান পরিদর্শন করেন।

সিএনএন আরাবিও এই খবরটি প্রকাশ করে লিখেছে: ‘ইরানের সংসদ স্পিকার ইরানের সর্বোচ্চ নেতার একটি বার্তা নিয়ে বৈরুতে পৌঁছেছেন। কলিবফ নিজে  বিমান চালিয়ে লেবাননের বিমানবন্দরে অবতরণ করেছেন’।

একইসাথে আল জাজিরার ওয়েবসাইটেও মোহাম্মদ বাকের কলিবফের নিজ হাতে বিমান চালানোর ভিডিও প্রকাশ করেছে। এ সংক্রান্ত খবরে আল জাজিরার শিরোণাম ছিল "ইরানী পার্লামেন্ট স্পিকার নিজে বিমান চালিয়ে বৈরুতে প্রবেশ করেন”।

মন্টে কার্লো নিউজ সাইটের আরবি বিভাগও এ সংক্রান্ত রিপোর্ট করে বলেছে: ইরানি পার্লামেন্ট স্পিকার ব্যক্তিগতভাবে লেবাননে তার ভ্রমণের সময় বিমানটি চালিয়েছিলেন এবং বৈরুতে ইসরাইলের সবচেয়ে মারাত্মক হামলার স্থান পরিদর্শন করেন।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক জুড়ে কলিবফের এই বিমান চালানোর ভিডিওটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং ভাইরাল হয়েছে।

আল-আরাবি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইট আরও রিপোর্ট করেছে: ইরানের পার্লামেন্ট স্পিকার লেবানন সফরের সময় ব্যক্তিগতভাবে তার বিমান চালনা করেছিলেন। তিনি ইসরাইলের হামলার বিরুদ্ধে লেবাননের প্রতিরোধের প্রতি ইরানের সমর্থনের বার্তা বহন করে নিয়ে যান।

আল-কুদস-আল-আরাবি ওয়েবসাইট এ সম্পর্কে জানিয়েছে: আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, লেবানন সফরের সময় ইরানি সংসদের স্পিকারের বিমান চালনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এদিকে, বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলিতে ইসরাইলি হামলার কারণে সৃষ্ট ধোঁয়া বৈরুত বিমানবন্দরে কালিবফের বিমান অবতরণের সময় দেখা যায়।

এদিকে, গুরুত্বপূর্ণ আরবি মিডিয়াগুলো ছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স চ্যানেলের আরবিভাষী ব্যবহারকারীরাও ইরানের সংসদ স্পিকারের এই সাহসী পদক্ষেপের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

একজন ইরাকি বিশেষজ্ঞ "আব্বাস আল-আরদাউই" এই বিষয়ে বলেছেন, আরবরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল, তখন কলিবফ ইরানের সর্বোচ্চ নেতা ও ইরানি জাতির বার্তা বহনকারী বিমানটি বৈরুতে উড়িয়ে  নিয়ে গিয়েছিলেন।

আরাবিয়া ফেলিক্সের সাইটে লেখা হয়েছে: বৈরুত বিমানবন্দরে অবতরণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি ছিল কলিবফ বিমানটি অবতরণ করার সময় বৈরুতের দক্ষিণ শহরতলির আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলি দেখা গিয়েছিল।

সামাজিক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এক্স ব্যবহারকারী সালিম নামে এক ব্যক্তি তার পোস্টে লিখেছেন: কলিবফ বৈরুত বিমানবন্দরে ইরানী বিমানের বিরুদ্ধে তেল আবিবের হুমকিকে চ্যালেঞ্জ জানাতে ব্যক্তিগতভাবে এই বিমানটিকে চালিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। 

news