ভারত দাবি করেছে যে তারা পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নির্ভুল হামলা চালিয়েছে, যাকে তারা "অপারেশন সিন্দুর" নামে অভিহিত করেছে। তবে পাকিস্তান এই হামলাকে বেসামরিক এলাকার উপর অযৌক্তিক এবং উস্কানিমূলক আক্রমণ হিসেবে বর্ণনা করেছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলায় বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং তারা এর জবাব দেওয়ার অধিকার রাখে। 

ভারতের বুধবার মধ্যরাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, যা তারা পাকিস্তান ও আজাদ কাশ্মীরে চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। ভারত এই হামলাকে "অপারেশন সিন্দুর" নামে অভিহিত করেছে এবং বলেছে যে তারা সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করেছে। তবে পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে যে এই হামলা বেসামরিক এলাকায় সংঘটিত হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই হামলায় কোটলি, মুরিদকে, বাহাওয়ালপুর এবং মুজাফফরাবাদে বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের ইসলামাবাদের প্রতিনিধি এই ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরবেন।

ইসলামাবাদে এখন পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সম্পূর্ণভাবে বেসামরিক এলাকায় লক্ষ্য করে করা হয়েছে। কোটলি, মুজাফফরাবাদ, মুরিদকে এবং বাহাওয়ালপুরের আবাসিক এলাকায় ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তান এই হামলাকে একটি উস্কানিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে এবং এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের কাছে এই হামলার তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

এই হামলার পেছনে পটভূমি হিসেবে ভারত গত ২২ এপ্রিল পাহালগামে সংঘটিত একটি সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করেছে, যেখানে ২৬ জন নিহত হয়েছিল। ভারত দাবি করেছে যে এই হামলার সাথে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং বলেছে যে তারা এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে এবং একটি নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য প্রস্তুত। পাকিস্তানের মতে, ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই এই হামলা চালিয়েছে, যা শুধুমাত্র উত্তেজনা বাড়াবে। আমাদের বিশ্লেষক এই বিষয়ে কী বলছেন, শুনবো।

ভারতের এই হামলা একটি অযৌক্তিক এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ। পাকিস্তান বারবার বলেছে যে তারা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চায়। ভারতের এই হামলা কোনো সন্ত্রাসী ঘাঁটির বিরুদ্ধে নয়, বরং বেসামরিক নাগরিকদের উপর আঘাত করেছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। পাকিস্তান এখন পর্যন্ত সংযম দেখিয়েছে, তবে তারা জানিয়েছে যে তারা যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ভারতকে এই ধরনের আগ্রাসন থেকে বিরত রাখা।

পাকিস্তানের জনগণ এই হামলার পর কী প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে? আমাদের প্রতিনিধি মুজাফফরাবাদ থেকে সরাসরি যুক্ত হচ্ছেন।

মুজাফফরাবাদে জনগণের মধ্যে এখন ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেসামরিক এলাকা, যেমন বাজার এবং আবাসিক এলাকা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা চলছে। স্থানীয়রা ভারতের এই আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং পাকিস্তান সরকারের কাছে এর জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ঘটনায় কী প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে? জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র বলেছেন, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন এবং উভয় দেশকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারতের এই হামলা একটি একতরফা আগ্রাসন এবং এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। বেশ কয়েকটি দেশ উভয় পক্ষের প্রতি শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

কাশ্মীর ইস্যু এই সংকটের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। পাকিস্তান বরাবরই বলে আসছে যে কাশ্মীরের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া উচিত। ভারত এই অঞ্চলকে তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে। এই দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলছে এবং ভারতের সাম্প্রতিক হামলা এই উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

পাকিস্তান সরকার এই হামলার জবাবে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জরুরি বৈঠক ডেকেছেন, যেখানে সামরিক ও বেসামরিক নেতারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছেন। পাকিস্তান জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই ঘটনা উত্থাপন করবে এবং ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে।

এই মুহূর্তে পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটপূর্ণ। পাকিস্তান এই হামলাকে একটি অন্যায় আগ্রাসন হিসেবে দেখছে এবং জনগণ ও সরকার এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে।

news