আমেরিকার সঙ্গে বড় রকমের বাণিজ্যিক সংঘাতের মুখে পড়তে চলেছে ব্রিকস জোট! ট্রাম্পের শুরু করা শুল্কযুদ্ধের বিরুদ্ধে এবার সরাসরি মাঠে নামছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা। এই শক্তিধর নেতাদের নেতৃত্বে, ব্রিকস এখন আমেরিকার একক আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সম্প্রতি হোয়াইট হাউস ব্রাজিলের কিছু পণ্যের উপর সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছে। কিন্তু এই সিদ্ধান্তে মোটেই ভীত নন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা। উল্টো তিনি আমেরিকার এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন।

লুলা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আমেরিকার এই শুল্ক চাপানো ‘অবৈধ’ এবং এটা সরাসরি অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিতে নাক গলানো। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তিনি ইতিমধ্যে ব্রিকসের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন, যাতে একসঙ্গে থেকে এই চাপে প্রতিরোধ গড়া যায়।

চীনের সি জিনপিং এবং ভারতের মোদির সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনার পরিকল্পনা করছেন লুলা, যাতে শুল্ক-সংকটের বিরুদ্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।

এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ব্রিকস সদস্যদের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে। তখন থেকেই বোঝা যাচ্ছিল, ট্রাম্প কেবল ব্রাজিল নয়— চীন, ভারত ও রাশিয়াকেও একটা ‘সতর্কবার্তা’ দিতে চাইছেন।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের লক্ষ্য আসলে রাশিয়া। ব্রিকসের অধিকাংশ দেশ রাশিয়ার বড় বাণিজ্যিক অংশীদার। ফলে, ব্রিকস দেশগুলোর ওপর চাপ বাড়িয়ে রাশিয়ার ওপর প্রভাব ফেলা— বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে মস্কোকে বাধ্য করাই আমেরিকার মূল উদ্দেশ্য।

তবে বাস্তবতা হলো, এখনকার ব্রিকস জোট আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। অর্থনীতির দিক থেকে তারা এখন জি-৭-এর চেয়েও বড় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ২০০৬ সালে গঠিত এই জোটে পরে দক্ষিণ আফ্রিকা সহ আরও কয়েকটি দেশ যুক্ত হয়। চীন ও ভারত, যারা রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল ক্রেতা— তারাও ব্রিকসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য।

এই প্রেক্ষাপটেই লুলা ডি সিলভা ঘোষণা দিয়েছেন, ব্রিকসকে এক ছাতার নিচে এনে আমেরিকার বিরুদ্ধে ‘শক্ত প্রতিরোধ’ গড়ে তোলা হবে। ট্রাম্পের 'পাতানো ফাঁদে' পা না দিয়ে, লুলার লক্ষ্য এখন ব্রিকসকে গ্লোবাল শক্তি হিসেবে আরও এক ধাপ ওপরে তুলে আনা।

news