উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ও আধুনিক পারমাণবিক অস্ত্রের প্রদর্শনী করেছেন। ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার রাতে পিয়ংইয়ংয়ে এক বড় সামরিক কুচকাওয়াজে এই হাইপারসনিক ও আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উন্মোচন করা হয়।

এই কুচকাওয়াজে যে অস্ত্রগুলো দেখানো হয়, সেগুলোর মধ্যে আছে হোয়াসং-১১এমএ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং হোয়াসং-২০ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম)। উত্তর কোরিয়া নিজেই এসব অস্ত্রকে তাদের ‘সবচেয়ে শক্তিশালী পারমাণবিক কৌশলগত অস্ত্র’ বলে দাবি করেছে।

এই অনুষ্ঠানে কে কে ছিলেন? বিদেশি অতিথিদের তালিকায় ছিলেন চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা তো লাম।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম কী বলছে? তারা দাবি করছে, হোয়াসং-২০ নামের এই আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি আমেরিকার যেকোনো প্রান্তে আঘাত হানতে সক্ষম। যদিও এখনো পর্যন্ত এই সক্ষমতা প্রমাণ করতে ক্ষেপণাস্ত্রটির কোনো পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়নি।

বিশেষজ্ঞরা কী মনে করেন? আমেরিকার কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের পরমাণু নীতি বিশেষজ্ঞ অঙ্কিত পান্ডা বলছেন, "হোয়াসং-২০ এখনই উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার পারমাণবিক ক্ষমতার উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক। এই বছর শেষ হওয়ার আগেই তারা এটির পরীক্ষা চালাতে পারে।"

তিনি আরও যোগ করেন, "এই ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভবত একসাথে অনেকগুলো পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। এ ধরনের ক্ষমতা আমেরিকার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে সাহায্য করবে এবং কিম জং উনের প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করবে।"

আরও একটি ভয়ঙ্কর অস্ত্র: নতুন এই হোয়াসং-১১এমএ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি একটি বিশেষ ‘বুস্ট-গ্লাইড যান’ বা গ্লাইডার দিয়ে সজ্জিত। এটি দেখতে অনেকটা চ্যাপ্টা ও পাখনাযুক্ত। লক্ষ্যের দিকে এগোনোর সময় এটি একেবারে অনিয়মিত ও অপ্রত্যাশিত পথে উড়ে, যার ফলে কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পক্ষেই এটিকে শনাক্ত করা বা ধ্বংস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে।

কিম জং উন তার ভাষণে কি বললেন? তিনি তার সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘একটি অজেয় শক্তিতে পরিণত হতে হবে, যাতে যেকোনো হুমকিকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা যায়’।

 

news