মেক্সিকোতে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে অন্তত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে শনিবার  কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এই তথ্য জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, মেক্সিকোর মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব অংশে মুষলধারে বৃষ্টির কারণে নদী উপচে পড়েছে, অনেক রাস্তা ধসে গেছে। কিছু এলাকায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেশটির নাগরিক প্রতিরক্ষা বিষয়ক জাতীয় সমন্বয়কারী লরা ভেলাজকুয়েজ শুক্রবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কতগুলো এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? নাগরিক প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেক্সিকোর মোট ৩২টি রাজ্যের মধ্যে ৩১টিতেই ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো হলো পূর্বের ভেরাক্রুজ, কেন্দ্রের কুয়েরেতারো ও হিডালগো এবং উত্তর-মধ্য রাজ্য সান লুইস পোটোসি।

হিডালগো রাজ্যে পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। সেখানকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুইলারমো অলিভারেস রেইনার জানান, শুধু এই রাজ্যেই ১৬ জন মারা গেছেন। ভূমিধস ও বন্যায় রাজ্যের কমপক্ষে এক হাজার বাড়ি, ৫৯টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং ৩০৮টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

পাশের রাজ্য পুয়েবলায় কী অবস্থা? সেখানে নয়জন মারা গেছেন এবং ১৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন। রাজ্যের গভর্নর বলেছেন, ভারী বৃষ্টিপাতে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া ভূমিধসের কারণে একটি গ্যাস পাইপলাইন ফেটে গেছে।

উপকূলীয় রাজ্য ভেরাক্রুজের গভর্নর জানান, তাঁর রাজ্যে একজন পুলিশ অফিসারসহ মোট দুইজন প্রাণ হারিয়েছেন। প্রায় পাঁচ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নৌবাহিনী প্রায় ৯০০ মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়েছে।

কুয়েরেতারো রাজ্যে কী হয়েছে? সেখানকার কর্তৃপক্ষ ভূমিধসে একটি শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।

সরকারি হিসাবে, এই ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ৩ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ছয়টি রাজ্যের প্রায় এক হাজার কিলোমিটার রাস্তা поврежд হয়েছে।

মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাউম কি বললেন? শুক্রবার স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, “আমরা জনগণকে সাহায্য করার জন্য, রাস্তা খুলে দেওয়ার জন্য এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছি।”

সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে? ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নিয়মিত নজরদারি, মানুষজনকে নিরাপদে সরানো এবং ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কারের জন্য দেশটি ৮ হাজার ৭০০-রও বেশি সামরিক সদস্য মোতায়েন করেছে।

২০২৫ সাল জুড়েই মেক্সিকো অস্বাভাবিক ভারী বৃষ্টির মুখোমুখি হচ্ছে, রাজধানী মেক্সিকো সিটিতে বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভেঙে গেছে।

এদিকে, গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড় রেমন্ড এখনও মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে সক্রিয় আছে। এটি উত্তর দিকে এগোচ্ছে এবং সঙ্গে নিয়ে আসছে আরও ভারী বৃষ্টি। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী রবিবার এটি মেক্সিকোর মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানবে। দেশটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকেই টানা ভারী বৃষ্টি চলছে।

 

news