ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিরা গাজায় ফিরেছেন, নিজের পরিবার-পরিজনদের কাছে ফিরে আবেগে আপ্লুত। বহুজন বন্দি জীবনের কষ্ট ও মানবেতর অবস্থার কথা আল জাজিরা-কে জানিয়েছেন।
কসাইখানার অভিজ্ঞতা
মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিরা জানান, কারাগার নয়, বরং কসাইখানার মতো পরিবেশে তারা বন্দি ছিলেন।
আবদাল্লাহ আবু রাফি: “আমরা ছিলাম এক জীবন্ত নরকে। তোশক ছিল না, খাবার অত্যন্ত সীমিত, প্রতিদিন নতুন যন্ত্রণা।”
ইয়াসিন আবু আমরা: “খাবার, পানীয়, মারধর—সবই অমানবিক। চার দিন কিছু খেতে পারিনি। মুক্তির পর একটি মিষ্টি খেয়ে এক মুহূর্তে আনন্দ অনুভব করি।”
সাঈদ শুবাইর: “জেলের ফাঁক দিয়ে সূর্য দেখা, হাতের শিকল খোলা—স্বাধীনতার মূল্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।”
দীর্ঘ আটক ও নির্যাতন
মোহাম্মদ আল-খালিলি: ১৯ মাস বিনা অভিযোগে আটক। বললেন, “এটা ছিল এক ভয়াবহ সংগ্রাম। নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করেছি।”
ইয়াসির আবু তুরকি: “এটা যেন নরক থেকে স্বর্গে ফেরা। ব্যথা, আনন্দ আর এক অদ্ভুত কাঁপুনি রয়েছে।”
সাহিত্যিক ও নির্বাসিত বন্দি
বাসিম খানদাকজি, ২১ বছর বয়সে আটক, ১৯ বছর পরে মুক্তি পেলেও ফিলিস্তিনে ফিরতে পারলেন না। ইসরায়েল তাকে মিসরে নির্বাসিত করেছে।
বন্দিদশায় তিনি লিখেছেন উপন্যাস, প্রবন্ধ ও কবিতা। ২০২৪ সালে তার উপন্যাস ‘A Mask, The Color of the Sky’ আন্তর্জাতিক আরবি সাহিত্য পুরস্কার জিতেছে।
স্বাস্থ্যকর্মী বন্দিরা
মুক্তিপ্রাপ্ত তালিকায় অন্তত ৫৫ জন স্বাস্থ্যকর্মী—২৪ নার্স, ৭ চিকিৎসক, ২ প্যারামেডিক।
হেলথকেয়ার ওয়ার্কার্স ওয়াচ: “এদের মধ্যে ৪৪ জনকে কর্তব্যরত অবস্থায় অপহরণ করা হয়েছিল। এখনও ১১৫ জন বন্দি।”
ডা. মুয়াথ আলসের: “স্বাস্থ্যকর্মীদের অবৈধ আটক যুদ্ধাপরাধ। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তৎপর হতে হবে।”
সম্প্রতি মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা
প্রায় ২৫০ জন আজীবন সাজাপ্রাপ্ত ও দীর্ঘমেয়াদি সাজাভোগী মুক্তি পেয়েছে।
গাজা যুদ্ধ চলাকালীন আটক ১,৭১৮ জনকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘ তাদের ‘জোরপূর্বক নিখোঁজ’ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল।
