২৫০ কিলোমিটার বেগে ধেয়ে আসছে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ‘মেলিসা’, যা ইতোমধ্যেই ক্যারিবীয় অঞ্চলে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা, এই ঘূর্ণিঝড় জ্যামাইকায় ‘বিপর্যয়কর’ বন্যা, ভূমিধস ও ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনতে পারে। এতে হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
রেড ক্রসের তথ্য অনুযায়ী, মেলিসার প্রভাবে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। অনেক এলাকায় আগেই জরুরি সতর্কতা জারি করা হয়েছে এবং মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
মার্কিন ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার এনএইচসি জানিয়েছে, মেলিসা এখন ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়, যার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছেছে। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা তলিয়ে গেছে, বহু জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ঝড়টির তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জ্যামাইকায় তিনজন, হাইতিতে তিনজন এবং ডোমিনিকান রিপাবলিকে একজন। এছাড়া একজন নিখোঁজ বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
জ্যামাইকার সরকার জানিয়েছে, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য একটি বিশেষ অনলাইন সহায়তা পোর্টাল খোলা হয়েছে।
এদিকে প্রতিবেশী কিউবাতেও মেলিসার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সেখানে বিপদসঙ্কেত জারি করা হয়েছে এবং উপকূলীয় এলাকা থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার ভোর নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি কিউবার ভূমিতে সরাসরি আঘাত হানতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই এই ঘূর্ণিঝড় এত শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সাগরের তাপমাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মেলিসা অতিরিক্ত শক্তি অর্জন করেছে— যা শুধু জ্যামাইকার জন্য নয়, পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলের জন্যই এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের ইঙ্গিত বহন করছে।
