মিশরের গিজার গ্রেট পিরামিডের পাশেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর 'দ্য গ্র্যান্ড ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম (জিইএম)' আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়েছে। এই বিশাল জাদুঘরে এক লাখেরও বেশি প্রত্নবস্তু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে, যা প্রাক-রাজবংশীয় সময় থেকে গ্রীক ও রোমান যুগ পর্যন্ত প্রায় সাত হাজার বছরের ইতিহাস ধারণ করছে।
জাদুঘরটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো বালক ফারাও তুতেনখামুনের সম্পূর্ণ সংগ্রহ প্রথমবারের মতো একসাথে প্রদর্শিত হচ্ছে। ব্রিটিশ মিশরবিদ হাওয়ার্ড কার্টার ১৯২২ সালে এটি আবিষ্কারের পর এই প্রথম সমাধিতে পাওয়া সাড়ে পাঁচ হাজার সামগ্রীর মধ্যে ১,৮০০টির বেশি একসাথে দেখানো হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে তার বিখ্যাত সোনার মুখোশ, সিংহাসন ও রথ।
কী আছে এই জাদুঘরে?
৭০টি ফুটবল মাঠের সমান এলাকা জুড়ে তৈরি এই জাদুঘর
৩,২০০ বছর পুরনো ১১ মিটার উঁচু রামেসিস দ্য গ্রেটের মূর্তি
প্রাচীন মিশরীয় লিপি খোদাই করা দেয়াল
গিজা পিরামিডের বিশাল জানালা
আলাবাস্টার পাথরের ত্রিভুজাকার নকশা
দীর্ঘ পথ পরিক্রমা
এই জাদুঘর তৈরির প্রস্তাব প্রথম আসে ১৯৯২ সালে, নির্মাণ শুরু হয় ২০০৫ সালে। কিন্তু ২০১১ সালের আরব বসন্ত, কোভিড মহামারি এবং আঞ্চলিক সংঘাতের কারণে প্রকল্পটি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়। প্রায় ১.২ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে তৈরি এই জাদুঘরে বছরে ৮০ লাখ দর্শক দেখার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেরত চাইছে মিশর
সাবেক পর্যটনমন্ত্রী ড. জাহিদ হাওয়াস বলেছেন, "এখন আমি দুটি জিনিস চাই: প্রথমত, জাদুঘরগুলো চুরি করা প্রত্নবস্তু কেনা বন্ধ করুক; দ্বিতীয়ত, ব্রিটিশ মিউজিয়ামের রোজেটা স্টোন, লুভ জাদুঘরের ডেনডেরা জোডিয়াক এবং বার্লিনের নেফারতিতির মূর্তি ফিরে আসুক।"
ব্রিটিশ মিউজিয়াম অবশ্য বলেছে, তারা এই বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অনুরোধ পায়নি। রোজেটা স্টোন হায়ারোগ্লিফিকস পাঠোদ্ধারের চাবিকাঠি হিসেবে পরিচিত।
পর্যটকদের মধ্যে এই জাদুঘর নিয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। লন্ডন থেকে আসা এক পর্যটক বলেছেন, "আমরা সেখানে গিয়ে মিশরের প্রত্নসামগ্রী দেখার জন্য অপেক্ষা করছি।"
বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, এই জাদুঘর মিশরের পর্যটন শিল্পকে নতুন জীবন দেবে এবং মিশরবিদ্যার জন্য একটি নতুন সোনালী যুগের সূচনা করবে।
