ঘড়ির জগতে আবারও রেকর্ড গড়ল পাটেক ফিলিপ! ১৯৪৩ সালে নির্মিত বিরল এক হাতঘড়ি মাত্র সাড়ে নয় মিনিটে বিক্রি হয়েছে ১৪.১৯ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ দামে—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২১৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এই চমকপ্রদ নিলামটি পরিচালনা করেছে বিখ্যাত নিলাম প্রতিষ্ঠান ফিলিপস, আর আয়োজনটি হয় সুইজারল্যান্ডের জেনেভার বিলাসবহুল হোটেল প্রেসিডেন্টে।
ফিলিপস জানায়, মাত্র পাঁচজন দরদাতা অংশ নিলেও প্রতিযোগিতা ছিল রোমাঞ্চে ভরা। শেষ পর্যন্ত ফোনের মাধ্যমে একজন ক্রেতা ঘড়িটি নিজের করে নেন।
বিরল এই ঘড়িটির নাম Patek Philippe Perpetual Calendar Chronograph Reference 1518। এটি তৈরি হয়েছে স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে—যা একে সোনার সংস্করণের চেয়েও বেশি মূল্যবান করে তুলেছে। তথ্য অনুযায়ী, পাটেক ফিলিপ মোট ২৮০টি রেফারেন্স ১৫১৮ ঘড়ি তৈরি করেছিল, যার বেশিরভাগই ছিল হলুদ বা গোলাপি সোনার। কিন্তু স্টিল সংস্করণ তৈরি হয়েছিল মাত্র চারটি, আর এবার বিক্রিত ঘড়িটি সেই প্রথম দফার একটি।
এর আগেও এই একই ঘড়ি ইতিহাস গড়েছিল—২০১৬ সালে এটি বিক্রি হয়েছিল ১১ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁতে (প্রায় ১৬৮ কোটি টাকায়)। তবে সেই রেকর্ড ভেঙে দেয় ২০১৭ সালে হলিউড তারকা পল নিউম্যানের রোলেক্স ডেটোনা, যা বিক্রি হয়েছিল ১৭.৮ মিলিয়ন ডলারে (প্রায় ২১৭ কোটি টাকা)।
আর ২০১৯ সালে পাটেক ফিলিপের আরেক ঘড়ি গ্র্যান্ডমাস্টার চাইম বিক্রি হয় ৩১ মিলিয়ন ডলারে—যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩৭৮ কোটি টাকা, এখনো যা বিশ্বের সবচেয়ে দামী ঘড়ির রেকর্ড ধরে রেখেছে।
ফিলিপস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “Reference 1518 প্রমাণ করেছে এটি কেবল একটি হাতঘড়ি নয়— এটি সময়ের ইতিহাসেরই অংশ। এর নকশা, কারিগরি নিখুঁততা এবং বিরলতা একে অনন্য করেছে।”
উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৪১ সালে বাজারে আসা রেফারেন্স ১৫১৮ ছিল বিশ্বের প্রথম সিরিয়ালি উৎপাদিত পারপেচুয়াল ক্যালেন্ডার ক্রোনোগ্রাফ ঘড়ি—যা ঘড়ি নির্মাণের ইতিহাসে মাইলফলক সৃষ্টি করেছিল।
দুই দিনের এই বিশাল নিলামে মোট ২০৭টি ঘড়ি বিক্রি হয়, যার মোট মূল্য দাঁড়ায় ৬৬.৮ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০০ কোটি ৯৪ লাখ টাকার বেশি। এটি কোনো ঘড়ি নিলামের ইতিহাসে সর্বোচ্চ মোট বিক্রির নতুন রেকর্ড।
বিশ্বের ৭২টি দেশের ১,৮৮৬ জন নিবন্ধিত দরদাতা এই নিলামে অংশ নেন, যাদের মধ্যে ছিলেন অনেক বিখ্যাত সংগ্রাহক ও বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের প্রতিনিধি।
