সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে দুই থাই সেনা আহত হওয়ার ঘটনায় এবার কম্বোডিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলেছে থাইল্যান্ড। এই ঘটনার জের ধরে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যেকার উত্তেজনা আবারও চরমে উঠেছে। এর আগে, এই ঘটনার প্রেক্ষিতে থাইল্যান্ড কম্বোডিয়ার সাথে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় করা শান্তিচুক্তি স্থগিত করেছে।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের সামনে স্পষ্টই বলে দিয়েছেন, "আমরা চাই কম্বোডিয়া পক্ষ আমাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুক। আমরা তাদের কাছে অনুরোধও করেছি, তারা যেন এই ঘটনার সঠিক কারণ খুঁজে বের করে, দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে এবং ভবিষ্যতে যেন এমনটি আর না ঘটে তার ব্যবস্থা নেয়।"
গত সোমবার সীমান্তে টহল দেওয়ার সময় একটি স্থলমাইন বিস্ফোরিত হয়। এই বিস্ফোরণে দুই থাইল্যান্ড সেনা সদস্য মারাত্মকভাবে আহত হন। থাইল্যান্ডের পক্ষ থেকে সরাসরি অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই মাইনটি সম্প্রতি কম্বোডিয়া কর্তৃক সীমান্তে পুঁতেছিল।
কিন্তু কম্বোডিয়া এই অভিযোগ একদমই মানতে নারাজ। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, তারা কোনো নতুন মাইন পোঁতাের কাজ করে নি এবং থাইল্যান্ডের সাথে করা অস্ত্রবিরতি চুক্তি তারা মেনে চলতে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে এই দুই দেশের সীমান্তেই পাঁচ দিন ধরে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষে প্রায় ৪৮ জনের মৃত্যু হয় এবং প্রায় তিন লাখ মানুষকে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে হয়। সেই যুদ্ধে রকেট হামলা, ভারি অস্ত্রের গোলাবর্ষণ—সবই হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই দেশের নেতারা টেলিফোনে আলোচনা করেন এবং তারপরই মালয়েশিয়ায় একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
থাই সেনাবাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু জুলাই মাসের পর থেকে সীমান্তে বিভিন্ন স্থলমাইন বিস্ফোরণে অন্তত সাতজন থাই সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন। রয়টার্সের বিশ্লেষণ বলছে, এই মাইনগুলোর অনেকগুলোই সম্ভবত সম্প্রতি সেখানে রাখা হয়েছে।
থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ার মধ্যে এই সীমান্ত বিবাদ কিন্তু নতুন নয়। প্রায় একশো বছরেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে এই বিরোধ চলছে। ৮১৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সীমান্ত রেখাটি প্রথম আঁকা হয়েছিল ১৯০৭ সালে, যখন ফ্রান্স কম্বোডিয়াকে তার উপনিবেশ হিসেবে শাসন করত।
