মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা নিষেধাজ্ঞার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ‘অবৈধ, অমানবিক এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ বলে অভিহিত করেছে। সদ্য ঘোষিত ‘একতরফা বাধানিষেধবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক বিবৃতিতে এই কঠোর অবস্থান তুলে ধরা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই বলেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত রেজোলিউশন ৭৯/২৯৩ অনুযায়ী, চলতি বছর থেকেই ৪ ডিসেম্বরকে ‘একতরফা বাধানিষেধবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ হিসাবে পালন করা হচ্ছে। এই দিনটি ১৯৮৬ সালের ৪ ডিসেম্বর গৃহীত ‘উন্নয়নের অধিকার’ বিষয়ক ঘোষণার (রেজোলিউশন ৪১/১২৮) সাথেও যুক্ত।
বাঘাই আরও বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়াই আরোপিত একতরফা অর্থনৈতিক, আর্থিক ও ব্যাংকিং নিষেধাজ্ঞাগুলো জীবন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং উন্নয়নের মতো মৌলিক মানবাধিকারের উপর সরাসরি আঘাত হেনেছে। ইচ্ছাকৃতভাবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা ও কল্যাণকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর কারণে এই নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধে রূপ নিয়েছে।
তিনি স্পষ্ট ভাষায় অভিযোগ করেন, “উন্নয়নশীল দেশগুলোর জনগণের উপর অবৈধ ও অমানবিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেছে এবং তাদের এজন্য জবাবদিহির মুখোমুখি করা উচিত।”
দশকের পর দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা বজায় রেখেছে, যার পেছনে তেহরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ‘ভিত্তিহীন’ উদ্বেগের কথা বলা হয়। ২০১৮ সালের মে মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে পরমাণু চুক্তি (জেসিপিওএ) থেকে সরে দাঁড়ানোর পর এই নিষেধাজ্ঞাগুলো আরও কঠোরভাবে পুনর্বহাল করা হয়, যদিও চুক্তির সব শর্তই পূরণ করেছিল ইরান।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও অন্যান্য চিকিৎসা উপকরণ আমদানির পথ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। ওয়াশিংটন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা বারবার দাবি করলেও যে মানবিক পণ্য নিষেধাজ্ঞামুক্ত, বাস্তবে গত কয়েক বছরে হাজার হাজার রোগী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন বা গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতায় ভুগেছেন।
