মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইরানি রিয়ালের দাম এবার একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। দেশটির খোলা বাজারে এক মার্কিন ডলারের বিপরীতে বিনিময় হার উঠেছিল প্রায় ১২ লাখ ইরানি রিয়াল! যা ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ রেকর্ড।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের কড়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাই ইরানি মুদ্রার এই ধ্বসের প্রধান কারণ। এর উপর ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আটকে থাকা আলোচনা রিয়ালের অবস্থাকে আরও নাজুক করে তুলেছে।
সর্বশেষ বিনিময় হার অনুসারে, বাংলাদেশি ১ টাকার বিনিময় মূল্য প্রায় ১০ হাজার ৭০০ ইরানি রিয়াল। তবে এই বিশাল সংখ্যার রিয়াল দিয়ে ইরানে প্রায় কিছুই কেনা যায় না। ১০ হাজার রিয়াল দিয়ে সেখানে এক বোতল পানি পর্যন্ত কেনা সম্ভব নয়, হয়তো একটি চকলেট কেনা যেতে পারে।
রিয়ালের এই ধস ইরানের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। খাদ্যসহ নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া, যা জীবনযাত্রাকে দিন দিন দুঃসহ করে তুলছে।
এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ আরও একটি আশঙ্কায় রয়েছেন—ইরান ও দখলদার ইসরাইলের মধ্যে ফের যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। গত ১২ জুন শুরু হওয়া ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল এবং সেই উত্তেজনা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
৫৩ বছর বয়সী ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ার আলী মোশতাগ বার্তা সংস্থা এপিকে বলেন, "শুধু সাধারণ মানুষের জীবনই কঠিন হচ্ছে না, নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবলভাবে কমে যাওয়ায় সরকার পুরোনো অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণও চালিয়ে যেতে পারবে কিনা তা নিয়েও চিন্তা দেখা দিয়েছে।"
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কড়া নিষেধাজ্ঞায় ইরানের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ইরানের বিরুদ্ধে তার 'সর্বোচ্চ চাপ' নীতি পুনর্বহাল করেছেন, যার অংশ হিসেবে নতুন নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে জাতিসংঘ কর্তৃক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞাও ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যা ইরানের অর্থনীতির উপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।
