ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠী পপুলার ফোর্সেসের প্রধান নেতা ইয়াসের আবু সাবাব নিহত হয়েছেন। তিনি প্রকাশ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তেল আবিবের পক্ষে কাজ করে আসছিলেন। তার এই রহস্যজনক মৃত্যু গাজার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।
কারাগার থেকে মুক্তি ও অবস্থান: ইয়াসের আবু সাবাব ছিলেন বেদুইন উপজাতির নেতা। ২০২৩ সালে ইসরাইল গাজায় আগ্রাসন শুরু করলে তিনি মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের কারণে কারাগার থেকে পালিয়ে যান। এরপর রাফায় তিনি ইসরাইলিদের 'দোসর' হিসেবে কাজ শুরু করেন। তার বিরুদ্ধে ত্রাণ চুরিসহ নানা অভিযোগ ছিল।
হামাসের নির্দেশ: গত অক্টোবর মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর ইয়াসের আবু সাবাবকে হত্যা বা জীবিত গ্রেফতার করার জন্য নিজেদের যোদ্ধাদের নির্দেশ দিয়েছিল হামাস।
ইসরায়েলের অস্ত্র সরবরাহ: গত জুনে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রকাশ্যে স্বীকার করেছিলেন যে গাজায় হামাসবিরোধী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে তারা অস্ত্র সরবরাহ করছেন। এই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ইয়াসেরের পপুলার ফ্রন্টও ছিল। যদিও হামাসবিরোধী সংগঠনকে অস্ত্র দেওয়ার নীতির বিস্তারিত জানায়নি তেল আবিব।
মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা: গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) ইয়াসের আবু সাবাবের মৃত্যুর তথ্য জানায় বিভিন্ন ইসরাইলি গণমাধ্যম। ইসরাইলি আর্মি রেডিও দাবি করে, ইয়াসের আবু সাবাব আহত অবস্থায় দক্ষিণ ইসরাইলের সোরোকা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই তথ্য অস্বীকার করেছে। ইসরায়েলি এই দোসরটির মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রাফার পরিস্থিতি: যুদ্ধবিরতির পরও গাজার রাফা অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। ইয়াসের সেখানেই তার বাহিনী পরিচালনা করছিলেন। যুদ্ধবিরতির পরও রাফা উত্তপ্ত রয়েছে এবং সেখানে প্রায় প্রতিদিনই গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। গত ১৮ নভেম্বর ইয়াসের তার যোদ্ধাদের 'রাফা সন্ত্রাসী মুক্ত' করার নির্দেশ দেন, যার মূল লক্ষ্য ছিল হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করা।
হামাস যোদ্ধা আটকা: জানা যায়, রাফার বিভিন্ন সুড়ঙ্গে ১০০ থেকে ২০০ হামাস যোদ্ধা আটকা পড়ে আছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৪০ জনকে ইসরায়েল হত্যা করেছে।
