গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক যুদ্ধ থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে নেওয়া শান্তি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপের দিকে এগোতে চলেছে ইসরাইল ও হামাস। তবে অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে দুই পক্ষের মাঝেই বড় ধরনের মতপার্থক্য তৈরি হয়েছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাইম ৭ ডিসেম্বর (রবিবার) জানান, মার্কিন খসড়া পরিকল্পনাটিতে অনেক বিষয়ই পরিষ্কার নয়। তিনি বলেন, চলমান যুদ্ধবিরতির সময় অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ রাখা নিয়ে আলোচনায় হামাস রাজি, কিন্তু আন্তর্জাতিক ‘স্টাবিলাইজেশন ফোর্স’-এর হাতে নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারটি তারা মেনে নেবে না।
নাইম আরো বলেন, “সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় জাতিসংঘের বাহিনী যুদ্ধবিরতি তদারকি করবে—এটা আমরা স্বাগত জানাই। তারা লঙ্ঘন পর্যবেক্ষণ করবে, রিপোর্ট করবে, উত্তেজনা কমাতে সহায়তা করবে। কিন্তু ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে এই বাহিনী কোনো ধরনের কর্তৃত্ব দেখাবে—এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।”
তার এই মন্তব্য আসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্যের পরপরই। নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, তিনি মাসশেষে মার্কিন পরিকল্পনার নতুন ধাপে প্রবেশ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তার দাবি, বৈঠকের প্রধান লক্ষ্য হবে—গাজায় হামাসের শাসন শেষ করা এবং নিরস্ত্রীকরণের প্রস্তাবিত প্রতিশ্রুতিগুলো ‘কার্যকরভাবে’ নিশ্চিত করা।
জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জকে পাশে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু বলেন, “শান্তি প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হচ্ছে, যা প্রথম ধাপের মতোই কঠিন—হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজা থেকে সামরিকীকরণ দূর করা।”
তবে নাইমের বক্তব্যে স্পষ্ট নয়—ইসরাইল যেভাবে সম্পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণ চাইছে, তা কি পূরণ হবে। তিনি বলেন, হামাস এখনো ‘প্রতিরোধের অধিকার’ ধরে রেখেছে এবং ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে অস্ত্র সমর্পণ সম্ভব হতে পারে—যেখানে সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি পাঁচ থেকে দশ বছর স্থায়ী হতে পারে।
গাজার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার পথ রেখেছে। কিন্তু নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণাটিকেই প্রত্যাখ্যান করছেন—তার দাবি, এটি হামাসকে “পুরস্কৃত” করার সমান।
