ইরানের বেড়ে ওঠা সাইবার শক্তি নিয়ে ইসরায়েলে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি সাইবার অধিদপ্তরের (আইএনসিডি) প্রধান ইয়োসি কারাদি একটি বিরল স্বীকারোক্তি দিয়ে বলেছেন—ইরান একটিও গুলি না চালিয়ে সাইবার-প্রকৌশলের মাধ্যমে ইসরায়েলকে কার্যত কোনঠাসা করে ফেলেছে।
মার্চে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার জনসমক্ষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে "সাইবার সপ্তাহ ২০২৫" সম্মেলনে কারাদি প্রকাশ করেন, ইরান নিঃশব্দে ইসরায়েলের সাইবার সিস্টেমে এমনভাবে ঢুকে পড়েছে যে দেশটি তাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
কারাদি জানান, “১২ দিনের যুদ্ধের সময় ইরান সাইবার অস্ত্র ব্যবহার করে প্রতিটি ইসরায়েলিকে বহুবার লক্ষ্যবস্তু করার চেষ্টা করেছে।” তার দাবি—মোট ১,২০০টি সামাজিক প্রকৌশলভিত্তিক হ্যাকিং অভিযান চালানো হয়, এবং প্রতিটি অভিযানে একেকবারে হাজারো ইসরায়েলিকে লক্ষ্য করা হয়েছিল।
এতেই থেমে থাকেননি তিনি। কারাদি বলেন, যুদ্ধ চলাকালে তেহরান ইসরায়েলের পার্কিং লট ক্যামেরা এবং রাস্তায় থাকা পর্যবেক্ষণ ক্যামেরার অ্যাক্সেস পেয়েছিল। এসব ক্যামেরা ব্যবহার করে তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অবস্থান ও চলাচল ট্র্যাক করছিল, যেন সম্ভাব্য আক্রমণ পরিকল্পনা করতে পারে।
ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউটের ওপর ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনাটির কথাও তুললেন তিনি। তার দাবি—ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আগে ইরানের সাইবার টিম স্ট্রিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভবনটি পর্যবেক্ষণ করছিল।
কারাদি আরও জানান, আক্রমণের ঠিক আগে কেন্দ্রটির বিভিন্ন বিভাগের কর্মীদের ইরান হুমকিমূলক ইমেল পাঠায়, যাতে আতঙ্ক ও মানসিক চাপ বাড়ে। ইরানের ফাঁস করা গোপন তথ্য প্রকাশকেও তিনি “ভয়ভীতি ছড়ানোর একটি কৌশল” হিসেবে বর্ণনা করেন।
ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স ইসরায়েলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র, যেখানে সামরিক প্রযুক্তি, পারমাণবিক গবেষণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং জৈবপ্রযুক্তি সংক্রান্ত বহু উন্নত প্রকল্প পরিচালিত হয়। কেন্দ্রটির বেশ কিছু কার্যক্রম ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও সামরিক কর্মসূচির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিল।
