প্রতিবেশী দেশ কম্বোডিয়ার সাথে চলমান সীমান্ত সংঘাতের মধ্যেই নির্বাচনের প্রস্তুতির জন্য পার্লামেন্ট ভেঙে দিয়েছেন থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালংকর্ন। গতকাল বৃহস্পতিবার এক রাজকীয় ডিক্রি জারির মাধ্যমে পার্লামেন্ট বিলুপ্তির ঘোষণা দেন তিনি।
থাইল্যান্ডের সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্ট বিলুপ্তির পর ৪৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আনুতিন চার্নভিরাকুলের পরামর্শেই রাজা এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
ডিক্রিতে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিন মাস আগে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতসহ এমন সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তাকে এবং তার নেতৃত্বাধীন সরকারকে হতে হচ্ছে, যেগুলো আসলে নির্বাচিত সরকারের মোকাবিলা করা উচিত। এ কারণেই রাজাকে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গত মাসে থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ১৭৬ জন নিহত হন। এই ঘটনায় দেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন আনুতিন চার্নভিরাকুল। এমনকি পার্লামেন্টে তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের ব্যাপারেও আলোচনা চলছিল।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, এই অনাস্থা ভোটের আলোচনা ধামাচাপা দিতেই রাজাকে পার্লামেন্ট বিলুপ্তির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
কঠিন সময়ে রাজকীয় ডিক্রি
তবে এমন এক সময়ে এই ডিক্রি জারি করা হয়েছে, যখন সীমান্তে কম্বোডিয়ার সেনাবাহিনীর সাথে ব্যাপক সংঘাত চলছে থাই সেনাবাহিনীর। গত প্রায় চার দিন ধরে চলমান এই সংঘাতে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন উভয় দেশের অন্তত ২০ জন, এবং নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বাড়িঘর ছেড়ে ছুটতে বাধ্য হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
এই ব্যাপারেও রাজকীয় ডিক্রিতে উল্লেখ করেছেন আনুতিন। তিনি বলেছেন, "অতি সম্প্রতি দেশে জরুরি অবস্থা দেখা দিয়েছে এবং এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি প্রশাসন দ্রুত এবং তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিয়েছে... কিন্তু আপনি যখন একটি অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনা করবেন, তখন সবার আগে প্রয়োজন জাতীয় স্থিতিশীলতা।"
এখন দেখার অপেক্ষা, এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থাইল্যান্ডের উত্তপ্ত সীমান্ত পরিস্থিতি এবং অভ্যন্তরীণ সংকট সামলাতে কতটা সহায়ক হয়।
