রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ চতুর্থ বছরে গড়ালেও শান্তির আলো দেখা যাচ্ছে না। এবার সরাসরি হতাশা প্রকাশ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) তার মুখপাত্র জানিয়েছেন—কিয়েভ এবং মস্কো উভয়ের আচরণেই ‘খুবই হতাশ’ ট্রাম্প। যুদ্ধ থামাতে তিনি এখন আর বক্তব্য নয়, দৃশ্যমান পদক্ষেপ চান।
এই তথ্য জানিয়েছে কিয়েভ থেকে এএফপি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট এই যুদ্ধের উভয় পক্ষকে নিয়ে অত্যন্ত হতাশ। তিনি চান যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক। আর শুধু কথায় নয়—এবার কাজ দেখতে চান।”
এর আগে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়, সাম্প্রতিক মার্কিন শান্তি পরিকল্পনা অনেকটাই রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকে আছে। জেলেনস্কির দাবি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া আগ্রাসন শেষ করতে ওয়াশিংটন এখনো কিয়েভকে বড় ধরনের ভূখণ্ড ছাড় দিতে চাপ দিচ্ছে।
জেলেনস্কি জানান—মার্কিন পরিকল্পনায় শুধু ইউক্রেনকেই পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের কিছু এলাকা থেকে বাহিনী সরানোর কথা বলা হয়েছে। ওই অঞ্চলে দুই দেশের সৈন্যদের মাঝে একটি নিরস্ত্রীকৃত “মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল” তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। তবে রাশিয়াকে একইভাবে সেনা সরাতে বলা হয়নি।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া দক্ষিণাঞ্চলে তার অবস্থান বজায় রাখবে। আর উত্তরের যেসব অঞ্চল পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করার দাবি করেননি, সেসব জায়গা থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করবে।
ইতোমধ্যে ইউক্রেন এই প্রস্তাব সংশোধন করে ওয়াশিংটনের কাছে ২০ দফা পাল্টা প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যদিও তার বিস্তারিত এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেন, আলোচনার দুটি বড় বিতর্কিত বিষয় হলো—দোনেৎস্ক অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ এবং দক্ষিণে জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। এগুলো নিয়েই মূল দরকষাকষি চলছে।
মার্কিন পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, “তারা চায় ইউক্রেনীয় সেনারা দোনেৎস্ক থেকে সরে যাক। আর সম্ভাব্য সমঝোতা হলো—রুশ বাহিনী সেখানে প্রবেশ করবে না। তারা ইতোমধ্যেই অঞ্চলটিকে ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ বলছে।”
জেলেনস্কি আগেও স্পষ্ট করেছেন—ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড়ার কোনো সাংবিধানিক বা নৈতিক অধিকার তার নেই। বৃহস্পতিবার তিনি আরও বলেন, শেষ সিদ্ধান্ত জনগণের কাছ থেকেই আসতে হবে—নির্বাচন হোক বা গণভোট, ইউক্রেনের জনগণের মতই চূড়ান্ত।
মার্কিন পরিকল্পনায় আরও বলা হয়েছে—রাশিয়া খারকিভ, সুমি ও নিপ্রোপেত্রোভস্কে দখল করা এলাকা ছেড়ে দেবে, যেগুলোর ওপর মস্কো আনুষ্ঠানিক দাবি করেনি।
