অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডি সমুদ্রসৈকতে ইহুদি ধর্মের অন্যতম বড় উৎসব হানাকা উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গতকাল ভয়াবহ বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আতঙ্ক, চিৎকার আর রক্তক্ষয়ের সেই মুহূর্তে এক সাধারণ মানুষের অসাধারণ সাহস এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

সিরিয়ায় জন্ম নেয়া ফল বিক্রেতা আহমেদ আল-আহমেদ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গুলি করতে থাকা এক হামলাকারীকে জাপটে ধরেন। এরপর তার হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নেন তিনি। এই বীরত্বপূর্ণ পদক্ষেপের কারণে আরও অনেক মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হামলার পরপরই ওই সাহসী ব্যক্তিকে ঘিরে শুরু হয় আরেক বিতর্ক। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রথমে দাবি করেন, হামলাকারীকে নিরস্ত করা ব্যক্তি একজন ইহুদি।

তবে পরে আরেক বিবৃতিতে তিনি সেই মন্তব্য সংশোধন করে বলেন, ‘আহমেদ আল-আহমেদ একজন মুসলিম।
হামলার কিছুক্ষণ পর ইসরায়েলের উগ্রজাতীয়তাবাদী সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১৪-তে হিব্রু ভাষায় দেয়া বক্তব্যে নেতানিয়াহু বলেন, হামলাকারীদের হাত থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে ওই ব্যক্তি ‘ইহুদি বীরত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ রূপ’ দেখিয়েছেন। ওই বক্তব্যের ইংরেজি অনুবাদ উদ্ধৃত করে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, নেতানিয়াহু বলেন,

“আমরা আজ নৃশংসতার চূড়ান্ত রূপ দেখেছি, আবার ইহুদি বীরত্বের সর্বশ্রেষ্ঠ রূপটাও দেখেছি। এখানে আসার পথে একটি ভিডিওতে আমি একজন ইহুদিকে দেখলাম, যিনি হত্যাকারীদের একজনকে আঘাত করে অস্ত্র কেড়ে নিলেন এবং অসংখ্য প্রাণ বাঁচালেন।
তবে পরে ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করতে গিয়ে ইংরেজিতে দেয়া আরেক বক্তব্যে নেতানিয়াহু তার আগের মন্তব্য সংশোধন করেন। তিনি বলেন,

“আজ আমরা এক সাহসী ব্যক্তিকে দেখেছি। তিনি একজন মুসলিম। আমি তাকে স্যালুট করি। তার এই কাজ সন্ত্রাসীদের একজনের হাতে আরও অনেক নিরীহ ইহুদির প্রাণহানি ঠেকিয়েছে।
ধর্মপরিচয় সংশোধনের পাশাপাশি নেতানিয়াহু এই হামলার জন্য অস্ট্রেলিয়ার ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্তকেও দায়ী করেন এবং সে বিষয়ে কড়া সমালোচনা করেন।

 

news