মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চুক্তির সম্ভাবনা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি কাছাকাছি এসেছে। স্থানীয় সময় সোমবার জার্মানির বার্লিনে মার্কিন ও ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়, যেখানে বিদ্যমান মতপার্থক্য কমানোর চেষ্টা করা হয়। তবে কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আঞ্চলিক বিভিন্ন বিষয়ে এখনো বড় ধরনের মতবিরোধ রয়ে গেছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা জানিয়েছে, সোমবার ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প জানান, তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর নেতাদের সঙ্গে দীর্ঘ ও ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন। ট্রাম্প বলেন,
“আমরা ইউরোপীয় নেতাদের কাছ থেকে দারুণ সমর্থন পাচ্ছি। তারা সবাই চায় এই যুদ্ধ শেষ হোক।”

তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তিনি একাধিকবার কথা বলেছেন। ট্রাম্পের ভাষায়,
“আমার মনে হয়, আমরা এখন আগের চেয়ে—যেকোনো সময়ের চেয়ে—চুক্তির খুব কাছাকাছি আছি। এখন দেখব, আমরা কী করতে পারি।”

এর আগে জেলেনস্কিও জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা কঠিন হলেও ফলপ্রসূ হয়েছে।

বার্লিনে টানা দুই দিন ধরে চলা এই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় মার্কিন প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন স্টিভ উইটকফ। বৈঠকে অংশ নেন ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনার, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশের নেতারা।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের অন্যতম ভয়াবহ এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে, কিয়েভের ওপর মস্কোর কাছে কিছু ছাড় দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনের চাপ বাড়ার মধ্যেই এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনার পর এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা জানান, ইউক্রেনকে শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ইউরোপ-নেতৃত্বাধীন একটি বহুজাতিক বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।

নেতারা বলেন, এই বাহিনী ইউক্রেনের ভিতরে কাজ করবে, ইউক্রেনীয় বাহিনী পুনর্গঠনে সহায়তা দেবে, আকাশসীমা সুরক্ষিত রাখবে এবং নিরাপদ সমুদ্রপথ নিশ্চিত করবে। তাদের মতে, শান্তিকালীন সময়ে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ৮ লাখ হওয়া উচিত। রয়টার্সকে দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ন্যাটোর পারস্পরিক প্রতিরক্ষা নীতির মতোই, যা ‘আর্টিকেল ৫’-এর সঙ্গে তুলনীয়।

এর আগে ইউক্রেন ইঙ্গিত দিয়েছিল, শক্তিশালী পশ্চিমা নিরাপত্তা নিশ্চয়তার বিনিময়ে তারা ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করতে প্রস্তুত।

বার্লিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জেলেনস্কি বলেন, সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির আওতায় আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কিয়েভের জন্য কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা থাকবে, তা স্পষ্টভাবে জানা জরুরি। তিনি আরও বলেন, যেকোনো নিশ্চয়তার মধ্যে কার্যকর যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

 

news