চলমান যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকার প্রধান শহর গাজা সিটিতে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। এই হামলায় ঘটনাস্থলেই ৬ জন নিহত হন, আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

ঘটনাটি ঘটে গতকাল শুক্রবার গাজা সিটির তুফাহ এলাকায়। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, হামাস-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর তুফাহ এলাকার স্কুলগুলোতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বহু ফিলিস্তিনি। সেই আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি স্কুলের দোতলায় বিয়ের আয়োজন করা হয়েছিল। যুদ্ধের কারণে ঘরবাড়ি হারানো কয়েকটি পরিবারের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ঠিক সেই সময়েই ওই ভবনে বোমা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী।

এ ঘটনায় আইডিএফ এখনও হামলার কারণ বা লক্ষ্যবস্তু নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

এই হামলার পেছনের প্রেক্ষাপটও বেশ গুরুতর। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায়। এর পরদিন থেকেই গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে আইডিএফ। টানা দুই বছর চলা এই অভিযানে ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন, আহত হন ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। পুরো গাজা উপত্যকাই প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির পর ১০ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরায়েল। ট্রাম্পের প্রস্তাব ছিল তিন ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার। এর মধ্যে প্রথম ধাপের মেয়াদ ছিল ছয় সপ্তাহ, যার মেয়াদ এখন শেষের পথে।

প্রথম ধাপ শেষ হওয়ার আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও মার্কিন কর্মকর্তারা হামাস ও ইসরায়েল—উভয় পক্ষকেই দ্বিতীয় ধাপ শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছেন। ঠিক এমন পরিস্থিতির মধ্যেই গাজায় আবারও বোমা হামলার ঘটনা ঘটল।

তবে এটি যুদ্ধবিরতির সময় প্রথম হামলা নয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১০ অক্টোবরের পর থেকে আইডিএফ গাজায় দেড় শতাধিক ছোট-বড় হামলা চালিয়েছে, যা যুদ্ধবিরতির সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

 

news