বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারত এখন এক অভাবনীয় ভোটার যাচাই কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত। প্রায় একশ কোটি ভোটারের বিশাল তথ্যভাণ্ডার যাচাই-বাছাই ও সংশোধনের কাজে নেমেছেন কয়েক লাখ সরকারি কর্মচারী। উত্তরপ্রদেশসহ ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই কার্যক্রম চলছে, যেখানে প্রায় ৫০ কোটি ভোটারের নথিপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে।
দীর্ঘ ২১ বছর পর ২০০৩ সালের পুরোনো ভোটার তালিকা নতুন করে হালনাগাদ করার এই প্রক্রিয়ায় সময়ের তীব্র চাপের পাশাপাশি তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক ও প্রশাসনিক জটিলতা।
নয়ডার একটি স্কুলে কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষক প্রেম লতা গত দেড় মাস ধরে প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটার তালিকার কাজে ব্যস্ত। তার মতোই ৫ লক্ষাধিক কর্মীকে এই কাজে নিয়োজিত করা হয়েছে, যাদের মাসিক অতিরিক্ত ভাতা দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১ হাজার রুপি।
প্রেম লতা জানান, তার দায়িত্বে থাকা ৯৪৫ জন ভোটারের মধ্যে তিনি এখন পর্যন্ত ৬০০ জনের তথ্য যাচাই করতে পেরেছেন। বাকি অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন, কেউ মারা গেছেন, আবার কেউ একেবারেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
সাধারণ মানুষের সচেতনতার অভাব এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ঘাটতি কাজটিকে আরও জটিল করে তুলেছে। বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিক ও বিবাহিত নারীদের তথ্য যাচাই প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠছে।
এই বিশাল কর্মযজ্ঞ ঘিরে ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনেও তীব্র উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ক্ষমতাসীন হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদের আড়ালে বিরোধী সমর্থকদের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে লক্ষ লক্ষ নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে, যাদের মধ্যে অনেক জীবিত ভোটারের নামও রয়েছে বলে বিরোধী দলগুলোর দাবি।
