ভারতে বড়দিন ঘিরে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা ও নিপীড়নের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর হামলায় বড়দিনের মৌসুমে অন্তত ৬০টির বেশি সহিংস ঘটনার তথ্য মিলেছে বলে জানিয়েছে খ্রিস্টান ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো।

ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাধা, চার্চে হামলা

ভারতের ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বড়দিন ও তার আগের প্রস্তুতির সময় একাধিক রাজ্যে খ্রিস্টানদের ধর্মীয় আয়োজনে বাধা দেওয়া হয়েছে। কোথাও ক্যারল গানের অনুষ্ঠান ভেঙে দেওয়া হয়েছে, আবার কোথাও চার্চে প্রার্থনারত মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
বিবৃতিতে এসব ঘটনাকে ‘ধর্মীয় স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত’ হিসেবে উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

চার্চ ভাঙচুর ও হুমকির অভিযোগ

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তথ্যমতে, শুধু হেনস্তাই নয়—বিভিন্ন জায়গায় চার্চ ভাঙচুর, বড়দিনের সাজসজ্জা নষ্ট করা এবং উৎসবে অংশ নেওয়া মানুষদের ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনাও ঘটেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ওপেন ডোরস জানিয়েছে, বড়দিন ঘিরে সারা দেশে খ্রিস্টানদের ওপর অন্তত ৬০টির বেশি হামলার ঘটনা তারা নথিভুক্ত করেছে।

বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ

সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের জাবালপুরে। সেখানে বড়দিন উদযাপন করতে যাওয়া এক দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী খ্রিস্টান নারীকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন বিজেপির স্থানীয় নেত্রী আঞ্জু ভারঘাভার বিরুদ্ধে।
ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। বিরোধী দল কংগ্রেস ঘটনাটিকে ‘নিষ্ঠুর ও বর্বর আচরণ’ বলে নিন্দা জানায়। তবে অভিযুক্ত নেত্রী এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এখনো এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিক কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

সান্তা ক্লজকেও রেহাই নয়

এদিকে ওড়িশা ও দিল্লিতে পৃথক ঘটনায় উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীর সদস্যদের সান্তা ক্লজের পোশাক পরা ব্যক্তিদের হেনস্তা করতে এবং বড়দিন উদযাপনকারীদের ভয় দেখাতে দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানো হয়েছে।

 

news