সামরিক ও বেসামরিক ড্রোনের দ্রুত বিস্তার আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য নতুন করে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন অ্যাফেয়ার্স বলছে, সমন্বিত প্রতিরক্ষা কৌশল ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অভাবে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমার শৃঙ্খলা যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।

ফরেন অ্যাফেয়ার্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে উদীয়মান ড্রোন হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান প্রতিরক্ষার একটি উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অত্যাধুনিক মহাকাশ ও সামরিক প্রযুক্তি থাকা সত্ত্বেও এখনো ড্রোন শনাক্ত, নজরদারি ও প্রতিহত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পূর্ণাঙ্গ ও কার্যকর সমন্বিত ব্যবস্থা নেই। ড্রোন প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে এই দুর্বলতা মোকাবিলা করা দিন দিন আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে।

পার্সটুডে জানায়, ইউক্রেন যুদ্ধের অভিজ্ঞতা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে—ড্রোন কীভাবে কম খরচে বড় ধরনের, এমনকি কৌশলগত আঘাত হানতে পারে। একসময় যেখানে ড্রোন শুধু গোয়েন্দা কার্যক্রমেই সীমিত ছিল, এখন তা সামরিক তো বটেই, বেসামরিক ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। সহজলভ্যতা, দ্রুত মোতায়েন এবং বহুমুখী ব্যবহারের কারণে ড্রোন এখন স্থানীয় হুমকি ছাড়িয়ে বৈশ্বিক নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রূপ নিয়েছে বলে সতর্ক করেছে ফরেন অ্যাফেয়ার্স।

যুক্তরাষ্ট্রে ড্রোনের বাণিজ্যিক ও বিনোদনমূলক ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। পাশাপাশি এই প্রযুক্তিতে সজ্জিত বেসরকারি গোষ্ঠীর সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ফলে আকাশসীমা নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণের কাজ আরও জটিল হয়ে উঠছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রবন্ধকারের মতে, ড্রোনের হুমকি কেবল যুদ্ধক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, জনসমাগমপূর্ণ অনুষ্ঠান, বড় শহর, এমনকি বাণিজ্যিক বিমান চলাচলও এর লক্ষ্যবস্তু হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে, একটি সমন্বিত ও বিস্তৃত প্রতিরক্ষা কৌশলের অভাব শুধু সামরিক দুর্বলতার ইঙ্গিত নয়—এটি যুক্তরাষ্ট্রের স্বদেশ নিরাপত্তায় একটি বড় শূন্যতা। এই শূন্যতা পূরণে ওয়াশিংটনের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সমন্বিত নিরাপত্তা নীতির দ্রুত পদক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছে ফরেন অ্যাফেয়ার্স।

 

news