শক্তিশালী টাইফুন ধেয়ে আসছে জাপানে, ঘণ্টায় ২৫৭ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়বে উপকূলে

 আতঙ্কের প্রহর বাড়ছে। ঘরে বসেই দুর্যোগের অপেক্ষা করছেন জাপানবাসীরা। রাস্তাঘাটে লোকজন কম। বাতিল করা হচ্ছে একটার পর একটা ফ্লাইট। শতাব্দীর ভয়ঙ্করতম ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসছে জাপানে। পূর্ব চিন সাগর অতিক্রম করে সেই ঝড়ের অভিমুখ জাপানের দক্ষিণ উপকূলের দ্বীপগুলির দিকে। প্রচণ্ড বেগে সেখানেই ল্যান্ডফল হতে পারে অতি শক্তিশালী এই ঘূর্ণিঝড়ের।

জাপানের আবহাওয়া দফতর এবং টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার জানিয়েছে, সুপার টাইফুন হিন্নামনর ধেয়ে আসছে জাপানের দিকে। এখনই তার গতিবেশ ঘণ্টায় ১৬০ মাইল (২৫৭ কিলোমিটার)। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, এই ঘূর্ণিঝড় তার গতিবেগ আরও বাড়িয়ে ঘণ্টায় ১৯০ মাইল করতে পারে। শক্তি বাড়িয়ে একটু একটু করে জাপানকে লণ্ডভণ্ড করতে এগিয়ে আসছে শতাব্দীর ভয়ঙ্করতম এই ঝড়!

হান্নামনরের গতিপথের দিকে খেয়াল রাখছে নাসার ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নোয়া)-র পাঠানো সুয়োমি এনপিপি স্যাটেলাইট। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই ঘূর্ণিঝড় প্রবল গতিবেগে উপকূলে আছড়ে পড়লে সব লণ্ডভণ্ড করে দেবে।

‘ক্যাটেগরি ১’ পর্যায়ের ঘূর্ণিঝড় হান্নামনরের প্রভাবে জাপানের দক্ষিণের দ্বীপগুলির ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন। সমুদ্রে ৪১-৪৫ ফুট উঁচু ঢেউ ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার শহরগুলোকে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন।

হংকংয়ের অবজার্ভেটরি রিপোর্ট দিয়েছে, সকাল ১০টা নাগাদ জাপান থেকে ২৩০ কিলোমিটার পূর্বে ওকিনাওয়ার কাছে অবস্থান করছে সুপার টাইফুন। প্রতি ঘণ্টায় পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিম অভিমুখে ২২ কিলোমিটার করে এগিয়ে যাচ্ছে।

সামুদ্রিক ঝড় ‘জেবি’-র ধ্বংসলীলায় বিপর্যস্ত হয়েছিল পশ্চিম জাপান। ঝড়, ভারী বৃষ্টি, ধস, বন্যা এবং তাপমাত্রার হঠাৎ বদলে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিল জাপানের বহু শহর। মৃত্যু হয়েছিল বহু মানুষের। ১৯৫৮ সালের ঘূর্ণিঝড়ে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল জাপান। সেবার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নিখোঁজ হন অনেকে। আবহবিদরা জানিয়েছেন, এই সুপার টাইফুন কতটা ভয়ঙ্কর হবে সেটা পরেই বোঝা যাবে। এ দিন সকালের পর থেকে বুলেট-সহ সমস্ত ট্রেন পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। জাপানের একটি মেটিরিওলজিক্যাল এজেন্সি জানিয়েছে, এই ঝড়ের তাণ্ডবে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

news