তিনদিনে দ্বিতীয় মৃত্যুদণ্ড ইরানে, হিজাব বিদ্রোহ রুখতে মরিয়া খামেনেই প্রশাসন

তিনদিনে দ্বিতীয় মৃত্যুদণ্ড! হিজাব বিদ্রোহ রুখতে মরিয়া ইরানের আয়াতুল্লা আলি খামেনেইর প্রশাসন। বিচারের নামে প্রতিবাদীদের প্রাণদণ্ডের ভয় দেখিয়ে দেশজুড়ে ‘মোল্লাতন্ত্র’ ও ‘নীতি পুলিশে’র বিরুদ্ধে চলা আন্দোলন দমিয়ে দিতে চাইছে সরকার।

সংবাদ সংস্থা এএফপি সূত্রে খবর, মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ মিছিলে অংশ গ্রহণ করায় এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে ইরানের একটি আদালত। ওই ব্যক্তির নামপ্রকাশ করা হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে হিংসা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, শুনানির নামে কার্যত প্রহসনের পর অভিযুক্তকে প্রাণদণ্ড দেন বিচারক। আসামী পক্ষের কোনও আইনজীবী এজলাসে ছিল না বলেও খবর। গোটা বিচারপ্রক্রিয়ায় কোনও সাক্ষীকে পেশ করা হয়নি। বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের স্থানীয় আদালতগুলিকে হাতিয়ার করে প্রতিবাদ দমনের চেষ্টা করছে দেশটির সরকার। বিচারকদের উপর চাপ তৈরি করে মৃত্যুদণ্ড দিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, দিন তিনেক আগেই তেহরানের আদালত এক বিক্ষোভকারীকে ‘ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধে’ দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় ওই প্রতিবাদীকে। সেই সঙ্গে আরও পাঁচ প্রতিবাদীকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেয় ইরানের অপর একটি আদালত। সব মিলিয়ে কুড়ি জন প্রতিবাদীর বিরুদ্ধে এমন মামলা দায়ের করা হয়েছে, যেখানে দোষী সাব্যস্ত হলেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের নীতি পুলিশের মারে মৃত্যু হয় তরুণী মাহসা আমিনির। তারপর থেকেই দেশজুড়ে চলছে প্রতিবাদী মিছিল। স্বৈরশাসকের বিরোধিতায় ইটালির বুকে তৈরি হওয়া ‘বেলা চাও’ গানটি গেয়ে ইরানের (Iran) রাস্তায় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন আরব দুনিয়ার মেয়েরা। হিজাব বিরোধী (Anti-Hijab) সেই আন্দোলনে শামিল পুরুষদের একাংশও। কিন্তু বেকায়দায় পড়লেও কিন্তু অবস্থান বদলে নারাজ ইরানের সরকার। তেহরানের দাবি, এই বিক্ষোভে আসলে ষড়যন্ত্র এতে হাত রয়েছে আমেরিকার। একইসঙ্গে সরকারের আরও দাবি, এই আন্দোলনকে মদত দিচ্ছে ‘কোমলা’ বলে ইরানের একটি বামপন্থী সংগঠন এবং বেশ কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠী।

সংবাদ প্রতিদিন/এনবিএস/২০২২/একে

news