আপনি আচরি ধর্ম পরকে শেখাও: পাশ্চাত্যের প্রতি ইরান


ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কান্‌য়ানি মানবাধিকারের রাজনৈতিক ব্যবহারের বিষয়ে পাশ্চাত্যের ও বিশেষ করে মার্কিন সরকারের লজ্জাজনক রেকর্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, মার্কিন সরকার অন্য দেশগুলোর মানবাধিকারের বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো নৈতিক ও আইনি অধিকার রাখে না।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক টুইট-বার্তায় এই মন্তব্য করেছেন।  কান্‌য়ানি তার পোস্টে আফ্রিকান মার্কিন নাগরিক জর্জ ফ্লয়েডের গলার ওপর একজন মার্কিন পুলিশের পায়ের চাপ প্রয়োগের সেই নৃশংস ও পাশবিক হত্যাকাণ্ডের ছবি ও কুখ্যাত গুয়ান্তানামো কারাগারের বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতনেরও ছবি যুক্ত করেছেন।

নাসের কান্‌য়ানি লিখেছেন, অন্যান্য দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে এইসব অপরাধের রেকর্ড নিয়ে এবং একটি দখলদার ও সন্ত্রাসী শাসকগোষ্ঠীর প্রতি সমর্থনের কলঙ্ক নিয়ে অন্যান্য দেশের মানবাধিকার বিষয়ে কথা বলার বা মন্তব্য করার নৈতিক ও আইনি অধিকার কেউ রাখে না। তিনি মানবাধিকারের বিষয়কে একটি পবিত্র মূল্যবোধ হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ইরান মানবাধিকার উন্নত করাকে তার ইসলামী, মানবীয়, আইনি ও নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করে। 

পশ্চিমা সরকারগুলোকে উদ্দেশ করে তিনি আরও বলেছেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের উচিত নিজেদের লজ্জাজনক রেকর্ডগুলোর দিকে তাকিয়ে এ বিষয়ের রাজনৈতিক ও হাতিয়ারসুলভ ব্যবহার বন্ধ করা। মানবাধিকারের স্বঘোষিত ধ্বজাধারী হওয়ার দাবিদার মার্কিন সরকার ও তার সমগোত্রীয়রা তাদের ঘৃণ্য ঐতিহাসিক আচরণের কারণে মানবীয় বিবেকের আদালতে দোষী হয়ে আছে।

উল্লেখ্য গতকাল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন জার্মানি ও আইসল্যান্ডের অনুরোধে ইরানে বিদেশী মদদপুষ্ট দাঙ্গাবাজদের মোকাবেলায় ইরান সরকারের কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে আলোচনার বৈঠক ডাকে। ওই কমিশন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুয়া অভিযোগগুলো তদন্তের লক্ষ্যে একটি কথিত আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত মিশন গঠনের পক্ষে ভোট দেয়।  

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তেহরান কথিত ওই তদন্ত-মিশনকে সহযোগিতা করবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ইরান আরও বলেছে সহিংসতার বিষয়গুলো তদন্ত করতে ইরানে ইতোমধ্যে জাতীয় তদন্ত কমিটি কাজ করে যাচ্ছে। 

আসলে এটা সবার কাছে স্পষ্ট যে, খোদাদ্রোহী যদি ধর্মের উপদেশ দেয় তাহলে সেটা সবার কাছেই হাস্যকর ঠেকে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন শক্তিগুলোর ভণ্ডামি কবি জীবনানন্দ দাশের এই কবিতাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে: 

অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই – প্রীতি নেই – করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়
মহত্‍‌ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়। 
খবর পার্সটুডে/এনবিএস/২০২২/একে

news