প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’, নিন্দার মুখে পালটা তালিবানের

 প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’। এনিয়ে কারও কিছু বলার থাকতে পারে না। আন্তর্জাতিক মঞ্চে প্রবল নিন্দার মুখে পড়ে এভাবেই পালটা তোপ দাগল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। শুধু তাই নয়, মোল্লা আখুন্দজাদার দলের আরও বক্তব্য, আফগান বিচারব্যবস্থা নিয়ে বিশ্বমঞ্চে যে সমালোচনা হচ্ছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

গতবছর ক্ষমতা দখলের পর সম্প্রতি আফগানিস্তানে প্রথমবার প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে তালিবান। গত বুধবার তালিবানের তরফে সরকারিভাবে এই খবর জানানো হয়। তালিবানের মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ জানায়, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম তাজমির। ২০১৭ সালে এক ব্যক্তিকে ছুরি মেরে খুন করেছিল সে। সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আফগানিস্তানের পশ্চিম প্রান্তের ফারাহ প্রদেশে প্রকাশ্যে ওই ‘খুনি’কে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে নিহত ব্যক্তির বাবা। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সময় সেখানে উপস্থিত ছিল স্থানীয় তালিবান নেতৃত্ব। মুজাহিদ আরও জানিয়েছে, সেখানে উপস্থিত ছিল আফগানিস্তানের উপমুখ্যমন্ত্রী আবদুল ঘানি বারাদর, অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী সিরাজুদ্দিন হাক্কানি এবং দেশটির প্রধান বিচারপতি-সহ অনেকেই।

এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে বয়ে যায় নিন্দার ঝড়। অনেকেই বলছেন, তালিবান স্বমহিমায় ফিরেছে। তাই আফগানিস্তানের জেহাদি সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। তারই পালটা দিয়ে এক বিবৃতিতে মুজাহিদ বলে, ইসলাম এবং আফগানিস্তান সম্পর্কে ধারণা না থাকায় প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিষটি নিয়ে জলঘোলা করা হচ্ছে। তালিবান মুখপাত্রের আরও যুক্তি, আফগানিস্তানের ৯৯ শতাংষ মানুষ মুসলমান। এদেশে শরিয়া আইন চলবে। তাই এনিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। আমেরিকা এবং ইউরোপেও প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করার পর তালিবান (Taliban) আশ্বাস দিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। যারা নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেই কথা যে স্রেফ কথার কথা, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। তেমনই এক ঘটনা ফের সামনে এল। এই ধরনের শাস্তিদান অনেককেই মনে করিয়ে দিচ্ছে আফগানিস্তানের তালিবান শাসনের প্রথম পর্যায়ের কথা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কালে পরকীয়া, চুরির মতো ঘটনায় প্রকাশ্যে বেত মারা এমনকী মেরে ফেলার ঘটনাও ছিল স্বাভাবিক। সংবাদ প্রতিদি/এনবিএস/২০২২/একে

news