ইরানের ড্রোন সক্ষমতা ৩৩ শতাংশ বৃদ্ধি, ভূগর্ভস্থ বিমান ঘাঁটি চালু

ইরানের বিমান বাহিনীর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হামিদ ওয়াহেদি বলেছেন, তার বাহিনীর পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোনের সক্ষমতা এক বছর আগের তুলনায় শতকরা অন্তত ৩৩ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বুধবার তেহরানে বিমান বাহিনীর একদল কর্মকর্তাকে নিয়ে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে একথা জানান।

সর্বোচ্চ নেতাকে ব্রিফিংকালে জেনারেল ওয়াহিদি আরো বলেন, নানা ধরনের ড্রোন তৈরি এবং এসবের যুদ্ধ ক্ষমতায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বিশেষ করে পিস্টন ও টার্বাইন ইঞ্জিন নির্মাণ, এফ-১৪ যুদ্ধবিমানের সিম্যুলেটর তৈরি, ২৯টি পুরনো যুদ্ধবিমান সম্পূর্ণ মেরামত করে আবার বিমানবহরে যুক্ত এবং পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলের আকাশেই যুদ্ধবিমানে জ্বালানি সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করা ছিল বিগত এক বছরে তার বাহিনীর উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

ইসলামি বিপ্লবের মহান নেতা ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর প্রতি স্বৈরাচারী শাহ সরকারের বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের ঐতিহাসিক আনুগত্য প্রকাশের ৪৪তম বার্ষিকীতে বুধবার ইরানের বিমান বাহিনীর এক দল কর্মকর্তা ও জওয়ান সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে দেখা করতে যান।  

১৯৭৯ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শাহের বিমান বাহিনীর অফিসাররা ইমাম খোমেনী (রহ.)'র প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। এ কারণে ইরানে ফার্সি ১৯ বাহমান মোতাবেক ৮ ফেব্রুয়ারিকে বিমান বাহিনী দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

এদিকে গত মঙ্গলবার ইরান একটি ভূগর্ভস্থ বিমান ঘাঁটি চালু করেছে। ইরানের ঠিক কোথায় ভূ-গর্ভস্থ বিমান ঘাঁটিটি নির্মাণ করা হয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। তবে ফুটেজে দেখা যাচ্ছে এটি পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত, ঘাঁটিটি বোমা হামলার জন্য দুর্ভেদ্য, পরিষেবা ও জ্বালানি সুবিধা ছাড়াও অস্ত্র,  যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান, ড্রোন উৎক্ষেপণ করতে পারে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অফ স্টাফ মোহাম্মদ বাঘেরি মঙ্গলবার ঘাঁটি পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েল সহ আমাদের শত্রুদের কাছ থেকে ইরানের উপর যে কোনও আক্রমণের পাল্টা আঘাত দেখতে পাবে। এ বিমান ঘাঁটির উন্মোচন হল ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সময়ে। তেহরান গত মাসে ইস্ফাহান শহরের একটি সামরিক কারখানায় ড্রোন হামলার জন্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছে। যদিও ইসরায়েল তার জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত বা অস্বীকার করেনি, মিডিয়া রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে আক্রমণটি পশ্চিম জেরুজালেম থেকে করা হয়।

ইরান অভিযোগ করছে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা ইসরায়েলকে গোপন পরামর্শ দিয়েছিলেন ওই হামলার জন্যে। ইস্ফাহানে ওই হামলাটি রাশিয়ার কাছে ইরানের কথিত ‘কামিকাজে’ ড্রোন সরবরাহের কারণেই ঘটেছে বলে মনে করছে তেহরান। মস্কো এবং তেহরান উভয়ই অস্বীকার করেছে যে ইউক্রেনে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে, ক্রেমলিন বলেছে যে এটি ইউক্রেনের সামরিক এবং অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তুকে আঘাত হানতে অভ্যন্তরীণভাবে তৈরি ইউএভি ব্যবহার করে।

ফুটেজে দেখা যায় একটি এফ-৪ ফ্যান্টম ফাইটার-বোমারু বিমান ইরানের ভূগর্ভস্ত বিমান ঘাঁটি থেকে বের হয়ে আসে। এরপর সেটি একটি প্রশস্ত সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যায় এবং তা রানওয়ের পথ ধরে উড্ডয়ন করে। ঘাঁটিটি কমান্ড পোস্ট, হ্যাঙ্গার, রক্ষণাবেক্ষণ সাইট, জ্বালানী ডিপো এবং নেভিগেশন সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত। ইরানের সামরিক বাহিনী সারা দেশে এরকম বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ ঘাঁটি তৈরি করেছে, এর কয়েকটি পাহাড়ের নীচে তৈরি করা হয়েছে। এর আগে ভূগর্ভস্ত ড্রোন ও ব্যালেস্টিক মিসাইল ঘাঁটির পর ভূগর্ভস্থ বিমান ঘাঁটি নির্মাণের বিষয়টি প্রকাশ করল ইরান। আরটি

এনবিএস/ওডে/সি

news