জেরিকো শরণার্থী শিবিরে বর্বরোচিত ইসরায়েল সেনা অভিযানে বাস্তহারা ও নিহত শরণার্থীরা
ফিলিস্তিনের জেরিকো শহরে অবস্থিত শরণার্থী ক্যাম্পটিতে প্রবেশ করলেই দেখা যাছে সবাই নিজ নিজ পরিবারের নিহত সদস্যদের দাফন করতে ব্যাস্ত। আর অন্যরা তাদের চোখের সামনেই বসত বাড়ী, কৃষি খামার আর যানবাহনের ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করছেন। সোমবার খুব ভোরে নির্বিচারে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায় এই শরণার্থী শিবিরে। ছয় ঘন্টা ধরে চলে এই অভিযান।
হামলার সময় ৫ ফিলিস্তিনি নিহত হন।আর বাকিদের ধরে নিয়ে যায় ইসরায়েল বাহিনী। নিহত পাচ জনের চার জনই ওয়াইদাত পরিবারের সদস্য ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন রাফাত ওয়াইদাত (২১),ইব্রাহিম ওয়াইদাত (২৭) ও তাদের চাচাত ভাই আদহাম ওয়াইদাত (২২) এবং থায়ের ওয়াইদাত (২৮) , মালেক লাফি(২২)।
ইসরায়েল বাহিনী এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, তাদের সবাই সশস্ত্র যোদ্ধা ছিলেন। ২৮ জানুয়ারি ইসরায়েলের তেলের পাম্পে হামলার সঙ্গে তাদের মধ্যে দুইজন জড়িত ছিলেন।
ইসরায়েল সেনারা ১০ দিন ধরে জেরিকো শহর অবরুদ্ধ করে রাখার পর এই হামলা চালায়। চলতি মাসের ৪ তারিখে সেনারা ক্যাম্পটি ঘেরাও করলে বহু শরণার্থী আহত হন। এসময় অনেক ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় সেনারা।
৪০ বছর বয়সী স্থানীয় এক বাসিন্দা জিহাদ ওয়াইদাত আল-জাজিরা কে বলেন, ,’হামলার সময় সেনারা স্নাইপার, এন্টি ট্যাংক গ্রেনেড, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে।বুলডোজার দিয়ে ঘর বাড়িও গুড়িয়ে দেয় সেনাবাহিনী। আমরা এমন বর্বর হামলা আশা করিনি।‘ জিহাদের দুই ভাজতে এই হামলায় নিহত হয়েছেন ব্লে উল্লেখ করেন তিনি।এই হামলার ফলে আতংক তৈরি হওয়ায় শিশুদের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা যাচ্ছে বলেও জানায় সংবাদ মাধ্যমটি।
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অবস্থিত জেরিকো ক্যাম্পটিতে হানলার বিষয়টি সেনাদের নিধন পরিকল্পনার একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালে সেপ্টেম্বর থেকেই এই শিবিরে সেনাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ছোট ছোট গোত্র কাজ করে আসছে। মূলত নাবলুস ও জেনিন শহর পুনরুদ্ধার উদ্ধার করতে তারা প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। গত এক বছর ধরে তাদের নিধনে ইসরায়েল কাজ করছে। এর আগে গাজা উপতক্যায় হামলা চালিয়ে ৩০ জন শিশু সহ ১৭১ জনকে হত্যা করে ইসরায়েল বাহিনী।
সোমবারের এই হামলার বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় ৬১ বছর বয়সী হাসান ওয়াইদাত জানান, ‘আমদেরকে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসতে বলে সেনারা নাহলে গুড়িয়ে দেওয়া হবে। পরে তারা হামলা চালিয়ে সব ধংস করে দেয়। এর মেরামতের জন্য ২ লাখ ইসরায়েলী শেকেল ‘৫৭হাজার ৪০০ ডলার লাগবে। অবিরত প্রহারও করতে থাকে এসময় সেনারা।‘
হামলায় নিহত আধাম ওয়াইদাতের মা হানাদি মাহমুদ কবলেন,’ আমার সন্তান তার জীবনকে খুব ভালবাসত।এটা আমাদের বাড়ি।আমাদের ভূমি চুরি করে তারা হামলা চালিয়ে বন্দী করে নিয়ে যাচ্ছে। এখন আমার সন্তানকে মেরে ফেলেছে‘অন্যদিকে চার সন্তানের মা থাইর ওয়াইদাত জানান, ১৫ বছর বয়সে প্রথম বন্দী হন। আমরা দখলদারিত্বের অধীনেই জন্মলাভ করেছি বলে ক্ষুব্ধ মন্তব্য করেছেন আরেক বাসিন্দা আদনান আল-এমগাইতি। তবে তরুণ গোষ্ঠী সেনাদের প্রতিহত করতে সোচ্চার রয়েছে।
এনবিএস/ওডে/সি


