"ইসলামবিরোধী নারী সংস্কারের নামে যা চলছে, তা জনগণ কখনো মেনে নেবে না," বলেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল। গত শুক্রবার রাতে হাজারীবাগ উত্তর থানা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল জোরালো, স্পষ্ট এবং ইসলামী মূল্যবোধের পক্ষে এক দৃঢ় অবস্থান।

তিনি বলেন, "ইসলাম নারীকে যে মর্যাদা দিয়েছে, তা পৃথিবীর কোনো মতবাদ বা সংস্কার দিতে পারেনি। আধুনিকতার নামে ইসলামী আদর্শকে পাশ কাটিয়ে যারা নারী স্বাধীনতার কথা বলে, তারা আসলে নারীকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। ইসলামের সুরক্ষা ছাড়া নারীরা নিরাপদ নয়। আজকের সমাজে নারীরা যেসব নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, তার মূল কারণ ইসলামী বিধান থেকে দূরে সরে যাওয়া।"

নারী সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব নিয়ে তিনি তীব্র আপত্তি জানান। তাঁর মতে, এসব প্রস্তাব ইসলামী মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। "এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নারীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে, তাদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে," বলেই ক্ষান্ত হননি তিনি। তাঁর দাবি, ইসলামী আদর্শই নারীর প্রকৃত অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করতে পারে।

রাজনীতিতে ইসলামের ব্যবহার নিয়েও তিনি সরব হন। "যারা নির্বাচনের আগে ইসলামকে হাতিয়ার বানায়, তারাই আসলে ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করে। জামায়াতে ইসলামী কখনো ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে না, বরং ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম করে," বলেন তিনি। তাঁর কথায়, ইসলামী সমাজই পারে মারামারি, হানাহানি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।

জামায়াতে ইসলামীর অগ্রযাত্রা নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। "অতীতে অনেকেই আমাদের দমাতে চেয়েছে, কিন্তু পারেনি। কারণ আমরা আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লড়াই করি। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে-বিদেশে সক্রিয়, কিন্তু তাদের কোনো চক্রান্তই আমাদের পথ রোধ করতে পারবে না," বলেন তিনি দৃঢ়ভাবে।

নির্বাচন নিয়েও তাঁর পরিষ্কার বক্তব্য: "জামায়াতে ইসলামী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। কিন্তু তার আগে গণহত্যার বিচার হতে হবে, স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করতে হবে। নইলে আওয়ামী লীগের মতো দলগুলো পেশিশক্তি দিয়ে নির্বাচন নষ্ট করবে।"

অর্থনৈতিক সংস্কারের কথাও বলেন বুলবুল। "ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া সুদ-ঘুষ থেকে মুক্তি সম্ভব নয়। যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি ও জবাবদিহিতার মাধ্যমেই কেবল এই ব্যাধি দূর করা যাবে," বলেন তিনি।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, অধ্যাপক নূর নবী মানিকসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

#ইসলামী_আদর্শ #নারীর_মর্যাদা #জামায়াতে_ইসলামী #সুদ_ঘুষ_মুক্ত_বাংলাদেশ #সুষ্ঠু_নির্বাচন

news