জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি তুঙ্গে, বিএনপি ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ঘোষণার পরই দলটির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়েছে নতুন উদ্দীপনা। প্রার্থীদের ঘিরে বইছে উচ্ছ্বাস, চলছে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং প্রচার-প্রচারণা। ব্যানার-পোস্টার দিয়ে ছেয়ে গেছে শহর থেকে গ্রাম। মনোনয়নবঞ্চিতদের ক্ষোভ ধীরে ধীরে প্রশমিত হচ্ছে; বাড়ছে ঐক্যের আহ্বান। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও মাঠপর্যায়ে সবাইকে একসাথে ধানের শীষ প্রতীকের জন্য কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী ৩ থেকে ১০ জন পর্যন্ত মাঠে কাজ করেছেন। পাঁচটি জরিপ, সাংগঠনিক টিমের মতামত এবং স্থায়ী কমিটির মূল্যায়নের ভিত্তিতে সোমবার ২৩৭টি আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নবঞ্চিতদের অনুসারীরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৮ আসনে গণসংযোগকালে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ আহত হয়েছেন। তবুও একক প্রার্থীরা সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন। কেউ কেউ ঢাকা থেকে সড়ক, নৌ ও আকাশ পথে নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন এবং ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন।
৬৩টি আসনে এখনও বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেনি। এসব এলাকায় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন, ফলে নির্বাচনী আমেজ তৃণমূলের জন্য সরগরম।
চট্টগ্রাম: ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টিতে প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বিমানে এসে নেতাকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় বরণ পান। চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে এরশাদ উল্লাহ দ্বিতীয়বার মনোনয়ন পান। আনোয়ারা আসনে মনোনয়ন পাওয়া সরওয়ার জামাল নিজাম দু’বার নির্বাচিত হয়েছেন। নতুন প্রার্থী হুম্মাম কাদের চৌধুরী এবং মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিনও নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন।
পটুয়াখালী: মনোনয়ন পাওয়ার পর এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী জেলা বিএনপি সভাপতির অফিসে যান। প্রার্থী প্রথম জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
লক্ষ্মীপুর: যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি অষ্টপ্রহরব্যাপী হরিনাম যজ্ঞে উপস্থিত থেকে ধানের শীষের প্রতি সমর্থন আহ্বান করেন।
কুমিল্লা: কুমিল্লা-৬ আসনে বিএনপি প্রার্থী মনিরুল হক চৌধুরী বিজয়ী করতে যা প্রয়োজন সব করবেন বলে শপথ নেন।
ফরিদপুর: ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত চৌধুরী নায়াব ইউসুফ রাতেই নিজ বাড়িতে আসেন ও বাবার কবর জিয়ারত করেন।
নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁও: মনোনীতরা গণসংযোগ শুরু করেছেন। নজরুল ইসলাম আজাদ তৃণমূলের প্রতি বার্তা দেন, “আমি আপনাদের সন্তান ও ভাই, দলমত নির্বিশেষে আড়াইহাজারের সবাই আমার আপনজন।”
টঙ্গী ও গাজীপুর: গাজীপুর-৫ প্রার্থী একে এম ফজলুল হক মিলন গণসংযোগ শুরু করেছেন। গাজীপুর-২ প্রার্থী এম মঞ্জুরুল করিম রনি বাবা অধ্যাপক এমএ মান্নানের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেছেন।
চাঁদপুর: চাঁদপুর-৩ প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক এবং চাঁদপুর-২ প্রার্থী ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন নির্বাচনী এলাকায় গণসংযোগে ব্যস্ত। চাঁদপুর-১ প্রার্থী আ ন ম এহসানুল হক মিলন স্থানীয় মাজারে কবর জিয়ারতের মাধ্যমে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জ-৩ প্রার্থী জি কে গউছ এক মতবিনিময় সভায় ভোটারদের ধানের শীষে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
রংপুর: জেলার ৬ আসনের প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সমর্থন চাইছেন। প্রার্থী সাইফুল ইসলাম, মোকাররম হোসেন সুজন, মোহাম্মদ আলী সরকার, সামসুজ্জামান সামু, এমদাদুল হক ভরসা ইতিমধ্যেই প্রচারণায় ব্যস্ত।
কক্সবাজার: কক্সবাজার-১ প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বিদেশে থাকলেও গণসংযোগ চলছে। কক্সবাজার-৩ লুৎফুর রহমান কাজল এবং কক্সবাজার-৪ সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী মাঠে ব্যস্ত।
চুয়াডাঙ্গা, মুন্সীগঞ্জ, রাঙামাটি, মৌলভীবাজার, নড়াইল, নাটোর, রাজবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, মাগুরা, লালমনিরহাট: মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা গণসংযোগ ও মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে মাঠে কার্যক্রম তুঙ্গে তুলে দিচ্ছেন।
সর্বত্র নির্বাচনী মাঠে ধানের শীষ প্রতীকের প্রতি উৎসাহ ও সমর্থন চোখে পড়ছে, তৃণমূল উচ্ছ্বাসে উজ্জীবিত।
