ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ গৌতম গাম্ভীর সবাইকে অবাক করে ইংল্যান্ডের পক্ষে সিরিজ সেরা খেলোয়াড় হিসেবে হ্যারি ব্রুককে বেছে নিয়েছেন। অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি ২০২৫-এ তাঁর এই সিদ্ধান্ত আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
স্টোকস, রুট ও ডাকেটের মতো তারকাদের পেছনে ফেলে ব্রুককে বেছে নেওয়ায় অনেকেই বিস্মিত। যদিও ব্রুক ৫৩-এর বেশি গড়ে ৪৮১ রান করেছেন। তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ৮১-এর বেশি।
ইংল্যান্ডের কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম ভারতীয় অধিনায়ক শুভমান গিলকে সিরিজ সেরা নির্বাচন করেন। এই পুরস্কার বাছাইয়ের দীর্ঘদিনের রীতি অনুযায়ী, স্বাগতিক দলের কোচ অতিথি দলের সেরা খেলোয়াড় বেছে নেন।
জো রুট এই সিরিজে ইংল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩৭ রান করেন। বেন ডাকেট সংগ্রহ করেন ৪৬২ রান। অন্যদিকে স্টোকস নেন ৩০৪ রান ও ১৭ উইকেট। তবুও গাম্ভীর ব্রুককেই প্রাধান্য দেন।
ব্রুকের সবচেয়ে স্মরণীয় ইনিংস ছিল ওভাল টেস্টের ৯৮ বলের ১১১ রান। সবুজ উইকেটে তাঁর এই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ম্যাচটি ভারতের হাত থেকে প্রায় ছিনিয়ে নিয়েছিল।
গাম্ভীর এখনও ব্যাখ্যা করেননি কেন তিনি ব্রুককে বেছে নিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চাপের মুহূর্তে ব্রুকের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সই মূল কারণ হতে পারে।
সিরিজ সেরা হওয়ার পর ব্রুক বলেন, তিনি নিশ্চিত ছিলেন ইংল্যান্ড জিতবে। তবে ভারতের ফাইটব্যাক ও সিরাজের বোলিংকে তিনি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করেন।
ব্রুক সিরাজের প্রশংসা করে বলেন, "তিনি পাঁচ টেস্ট জুড়ে ৮৫+ স্পিডে বল করেছেন। তাঁর সাফল্য পুরোপুরি প্রাপ্য।" সিরাজের ওভাল টেস্টের ৫ উইকেট ভারতকে ৬ রানে জিততে সাহায্য করে।
৫ম টেস্টে ভারতের এই জয়ে সিরিজ ২-২ এ ড্র হয়। ওভালের উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ভারতের দখলে চলে আসে সিরাজের অসাধারণ বোলিংয়ের কল্যাণে।
ক্রিকেট বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাম্ভীর হয়তো ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ব্রুককে বেছে নিয়েছেন। ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান ইংল্যান্ডের ভবিষ্যত নেতা হিসেবে উঠে আসছেন।
সিরিজ জুড়ে ব্রুকের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং সত্যিই প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিশেষ করে চতুর্থ ইনিংসের চাপ সামলানোর তাঁর দক্ষতা বিশেষভাবে নজর কেড়েছে।
গাম্ভীরের এই সিদ্ধান্ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকে সমর্থন জানালেও অনেকেই রুট বা স্টোকসকে বাদ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, শুভমান গিল ভারতের পক্ষে সিরিজ সেরা হন ৫৮৮ রান নিয়ে। তাঁর ব্যাটিংয়ে ভারত বেশ কয়েকটি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে সক্ষম হয়।
অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির এই সিরিজটি ছিল রোমাঞ্চকর। উভয় দলই সমান তালে লড়াই করেছে। শেষ টেস্টে ভারতের জয়ে সিরিজ ড্র হওয়ায় উভয় দলের ভক্তরাই খুশি।
