এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচেই দারুণ জয়ে যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ। ভাগ্যের পরিহাস, শ্রীলঙ্কার জয়ে ভর করেই যেখানে সুপার ফোরে জায়গা করে নিয়েছিল টাইগাররা, শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই দলকেই ৪ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে দিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শ্রীলঙ্কা ৭ উইকেটে তোলে ১৬৮ রান। জবাবে সাইফ হাসানের ঝলমলে ব্যাটিং আর তাওহীদ হৃদয়ের পরিপক্ব ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ জয় ছিনিয়ে আনে ৪ উইকেট হাতে রেখে।
তবে রান তাড়ার শুরুটা ভালো হয়নি। ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই শূন্য রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান। এরপর চাপ সামলে লিটন দাস ও সাইফ হাসান যোগ করেন ৫৯ রানের জুটি। দলীয় ৬০ রানে লিটন বিদায় নেন—১৬ বলে ৩ চার মেরে ২৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে।
তৃতীয় উইকেটে সাইফ ও হৃদয় যোগ করেন আরও ৫৪ রান। এখানেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। সাইফ ৪৫ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন দুর্দান্ত ৬১ রানের ইনিংস। এরপর তিনি আউট হলে খানিক চাপ তৈরি হলেও হৃদয়ের পাশে দাঁড়ান শামীম হোসেন। দুজন মিলে ২৭ বলে ৪৫ রান যোগ করে কার্যত ম্যাচটিকে বাংলাদেশের দিকে নিয়ে আসেন। হৃদয় শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় করেন ৫৮ রান।
শেষ দিকে টানা দুই উইকেট পড়ে কিছুটা অস্বস্তি তৈরি হলেও নাসুম আহমেদ ঠান্ডা মাথায় বল গ্যালিতে ঠেলে এক রান নিয়ে জয় নিশ্চিত করেন। শামীম তখন অপরাজিত ছিলেন ১৪ রানে।
বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ৪ ওভারে ২২ রানে নেন ২ উইকেট। দাসুন শানাকাও পেয়েছেন ২টি উইকেট, ২.৫ ওভারে ২১ রান দিয়ে। তবে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন ব্যাট হাতে বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া সাইফ হাসান।
এর আগে লঙ্কান ইনিংসে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ক্যাচ মিসের মহড়া দেন। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দাসুন শানাকা খেলেন ঝড়ো ৩৭ বলে অপরাজিত ৬৪ রান (৩ চার ও ৬ ছক্কা)। আগের ম্যাচের নায়ক কুসল মেন্ডিস করেন ৩৪ রান। পাথুম নিসাঙ্কা (২২), চারিথ আসালঙ্কা (২১) ও কুসল পেরেরা (১৬) রান করে অবদান রাখেন।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। কাটার মাস্টার ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। মাহেদী হাসানও ছিলেন কার্যকর, ৪ ওভারে ২৫ রানে নেন ২ উইকেট। তাসকিন আহমেদ একটি উইকেট পেলেও ছিলেন কিছুটা খরুচে। তবে শরীফুল ইসলাম (৪-০-৪৯-০) ও নাসুম আহমেদ (৪-০-৩৬-০) উইকেটশূন্য থেকে যান।
এবার সামনে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জ। বুধবার একই ভেন্যুতে শক্তিশালী ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আর বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ। ফাইনাল খেলার আশা জিইয়ে রাখতে হলে দুই ম্যাচের অন্তত একটিতে জিততেই হবে টাইগারদের।


