পাকিস্তানি ওপেনার শাহিবজাদা ফারহানকে নিয়ে আবারও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টিতে ঘটে এক বিতর্কিত ঘটনা—যেখানে দর্শকদের গলা ফাটানো স্লোগানে উঠে আসে, “বুমরাহ কে আব্বু” (বুমরাহর বাবা)। অবাক করা বিষয় হলো, পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা সেই মন্তব্য শুনে করতালিতে সাড়া দেন!
“বুমরাহ কে আব্বু” স্লোগানে মাঠ মাতালো পাকিস্তানি সমর্থকরা
শনিবার গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে বাউন্ডারির ধারে ফিল্ডিং করছিলেন শাহিবজাদা ফারহান। ঠিক তখনই গ্যালারি থেকে পাকিস্তানি দর্শকরা শুরু করেন ভারতীয় পেসার জাসপ্রিত বুমরাহকে উদ্দেশ্য করে কটূক্তি। তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করতে থাকেন — “বুমরাহ কে আব্বু!”
বেশ কয়েকবার স্লোগানটি উচ্চারিত হলে দেখা যায়, শাহিবজাদা ফারহান সেটি শুনে হাসছেন এবং করতালি দিচ্ছেন। এই আচরণে অনেকেই হতাশ হয়েছেন, কারণ সেটি ছিল প্রকাশ্যেই স্পোর্টসম্যানশিপবিরোধী একটি কাজ।
ফারহানের প্রতি পাকিস্তানি সমর্থকদের এমন উল্লাসের কারণও স্পষ্ট—গত এশিয়া কাপে বুমরাহর বলে তিনটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন ফারহান। সেটিই এখন পর্যন্ত তাঁর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য হিসেবে ধরা হয়।
পাকিস্তানের দারুণ সিরিজ জয়
শনিবারই অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ম্যাচের শেষ টি-টোয়েন্টি। স্বাগতিকরা সেই ম্যাচে ৪ উইকেটে জিতে নেয় সিরিজ ২-১ ব্যবধানে।
পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আগা বলেন,
“আমরা ১-০ পিছিয়ে ছিলাম, তাই পরের দুই ম্যাচে এমন জয়ে পুরো দলকেই কৃতিত্ব দিতে হবে।”
শাহিবজাদা ফারহানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার ছিলেন শাহিবজাদা ফারহান। ভারতের বিপক্ষে দুইটি অর্ধশতকসহ তিনিই ছিলেন দলের টপ-স্কোরার। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ধারাবাহিকতা দেখা যায়নি। শেষ ম্যাচেও তিনি ১৮ বলে মাত্র ১৯ রান করেই আউট হন।
তবু মাঠে তাঁর নাম ঘিরে দর্শকদের এমন প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানের সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। “বুমরাহ কে আব্বু” লেখা ব্যানার, ভিডিও ক্লিপ—সবই ছড়িয়ে পড়েছে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে।
🇮🇳 অন্যদিকে বুমরাহ ইতিহাসের দুয়ারে
অন্যদিকে, ভারতের পেস সেনসেশন জাসপ্রিত বুমরাহ দারুণ ফর্মে আছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে দুই উইকেট নিয়ে এখন তাঁর মোট উইকেট সংখ্যা ৯৮। মাত্র দুই উইকেট দূরে তিনি ছুঁতে যাচ্ছেন টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের মাইলফলক, যা এর আগে অর্জন করেছেন কেবল এক ভারতীয় বোলার।
এশিয়া কাপে ভারতের হয়ে তিনি নিয়মিত উইকেট নিয়েছেন এবং পাওয়ারপ্লেতে দিয়েছেন সবচেয়ে কম রান। হাডিক পাণ্ডিয়া ও শিবম দুবের সঙ্গে বুমরাহ ভারতের বোলিং আক্রমণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দারুণভাবে।
ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হোক, অপমান নয়
যদিও প্রতিদ্বন্দ্বিতা ক্রিকেটের সৌন্দর্য বাড়ায়, তবে খেলোয়াড়কে অপমান করা বা অশালীন মন্তব্যে করতালি দেওয়া কখনোই খেলার চেতনার অংশ হতে পারে না — এমনটাই মত অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষকের।
