সব ফরম্যাট মিলিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দল এবং টস যেন একই পথে হাঁটছিল না। বিশেষ করে দীর্ঘ ফরম্যাটের সাদা বলের ক্রিকেটে টানা ২০টি টসে হারার এক মারাত্মক রেকর্ড তৈরি হয়েছিল। অবশেষে, সিরিজের এই ফাইনাল তথা ফয়সলাকারী ম্যাচে এসে অধিনায়ক কে এল রাহুল টস জেতায় দলের সবাই, বিশেষ করে হার্ষিত রানা, যেন আনন্দের বন্যায় ভেসে গেছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজে নামার আগে থেকেই ভারতের টস জেতার রেকর্ড ছিল শোচনীয়। রায়পুরে দক্ষিণ আফ্রিকা জেতার পর সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। তাই বিশাখাপত্তনমে এই ফাইনাল ম্যাচটি সিরিজের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত, স্ট্যান্ড-ইন ক্যাপ্টেন রাহুল এবার বাঁ হাতে কয়েন ফ্লিপ করে সেই অভিশাপ ভাঙলেন এবং টস জিতে নিলেন।

সাদা বলের দীর্ঘ ফরম্যাটে ভারত শেষবার টস জিতেছিল ২০২৩ সালের আইসিসি ওডিআই বিশ্বকাপে। সেই সময় প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিত শর্মা ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টস জিতেছিলেন। এরপর থেকে টানা ২০টি ম্যাচে রোহিত, শুভমান গিল বা কে এল রাহুল কেউই আর টস জেতেননি।

বিশাখাপত্তনমে টস জিতেই ঋষভ পান্তকে লাফিয়ে জড়িয়ে ধরলেন হার্ষিত রানা
স্ট্যান্ড-ইন ভারতীয় অধিনায়ক কে এল রাহুল এই সিরিজে আরও দুটি টস হেরেছিলেন, তাই বিশাখাপত্তনমে সিরিজের ফয়সলাকারী ম্যাচে নামার আগে কিছুটা চাপ ছিলই। তবে ফাইনাল ম্যাচে এবার বাঁ হাত দিয়ে কয়েন ফ্লিপ করতেই ভাগ্য সহায় হলো রাহুলের।

টস জিতে তিনি যেন আনন্দের বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে ভেসে যান। তিনি হাসতে হাসতে একটি মজার সেলিব্রেশনও করেন, যা দেখে মাঠে উপস্থিত সতীর্থ এবং অন্যরা হেসে ফেলেন। টস জেতার পর তিনি ভারতীয় একাদশে কে কে সুযোগ পেয়েছে, সেই ঘোষণা করেন।

তবে সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে থাকা হার্ষিত রানা, আরশদীপ সিং এবং ঋষভ পান্ত ছিলেন সবচেয়ে বেশি উত্তেজিত। টসের ফল জানার পরই তারা প্রাণ খুলে উদযাপন করতে শুরু করেন। হার্ষিত রানা সবার চেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিলেন এবং তিনি আনন্দে ঋষভ পান্তকে লাফিয়ে জড়িয়ে ধরেন, যা দেখে বোঝা যাচ্ছিল টানা টস হারার জট খুলে যাওয়ায় তাদের স্বস্তি কতটা।

টস জিতেও শিশির কাজে লাগাতে চাইছে ভারত
ভারতীয় সহকারী কোচ রায়ান টেন ডেসকাটেও ম্যাচের আগে অতিরিক্ত শিশির (Dew) নিয়ে বেশ চিন্তিত ছিলেন। কারণ ইনিংসের পরের দিকে শিশির খেলার ওপর বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতীয় দলকে সেই কারণে ভেজা বল দিয়েও অনুশীলন করতে দেখা গিয়েছিল, যাতে ব্যাটার ও বোলাররা বিশাখাপত্তনমে অতিরিক্ত শিশিরের প্রভাব মোকাবিলা করতে পারেন।

তবে টস জেতার পর ভারতের পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসে। ভারতীয় অধিনায়ক কে এল রাহুল সঙ্গে সঙ্গেই প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা হয়তো ভেবেছেন যে ভেজা বল দিয়ে যতই অনুশীলন করা হোক না কেন, বোলিং করার চেয়ে এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করাটাই বেশি সহজ হবে।

ভেজা বল নিয়ে ভারতের পরিকল্পনা জানালেন মুরলী কার্তিক
ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে প্রাক্তন ভারতীয় বাঁ-হাতি স্পিনার মুরলী কার্তিক এই সিরিজে খেলা অন্যান্য ভেন্যুগুলোর তুলনায় যেখানে সবচেয়ে বেশি শিশির পড়ার সম্ভাবনা আছে, সেখানে ভারতের প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন।

অতিরিক্ত শিশিরের অর্থ হলো, বোলারদের পক্ষে বল গ্রিপ করা কঠিন হয়ে যাওয়া। আর প্রতিবার বল যখন আউটফিল্ডে যাবে, তখন শিশিরের কারণে তা আরও বেশি ভিজে যাবে।

মুরলী কার্তিক বলেন, "ভেজা বল এবং বড় বাউন্ডারির চেয়ে আমি যেকোনো দিন শুকনো বল এবং ছোট বাউন্ডারি বেছে নেব।" প্রাক্তন স্পিনার রসিকতা করে আরও বলেন, "অবশ্যই, সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হবে ছোট বাউন্ডারিতে ভেজা বল।"

 

news