লিওনেল মেসির কলকাতা সফরটা যেন স্বপ্ন থেকে দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হাজার হাজার ফ্যান এসেছিলেন মেসিকে কাছ থেকে দেখার আশায়। টিকিটের দাম ৫ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা – কিন্তু অনেকেই মেসির মুখ পর্যন্ত ঠিকমতো দেখতে পেলেন না!

মেসি সকাল ১১:১৫-এ লুইস সুয়ারেজ আর রদ্রিগো ডি পলকে নিয়ে স্টেডিয়ামে ঢুকতেই ‘মেসি মেসি’ চিৎকারে গোটা সল্টলেক কেঁপে উঠল। কিন্তু তারপরই শুরু হলো বিশৃঙ্খলা।

পড়ুনও: গৌতম গম্ভীরকে পক্ষপাতের অভিযোগ সাবেক ভারতীয় তারকার – শুভমন গিলকে বাদ দিয়ে সঞ্জু স্যামসনকে খেলানোর দাবি
মেসির চারপাশে ভারী সিকিউরিটি, অফিসিয়াল আর বিশেষ অতিথির ভিড় – স্ট্যান্ড থেকে বেশিরভাগ ফ্যান কিছুই দেখতে পেলেন না।

 মেসি পুরো স্টেডিয়ামে ল্যাপ নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় মাত্র ৩০ মিনিট থেকে টানেল দিয়ে বের করে নেওয়া হলো তাকে। ফ্যাসিলিটেশন সেরিমনি বাতিল – শাহরুখ খান, সৌরভ গাঙ্গুলি আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উপস্থিতিতে যেটা হওয়ার কথা ছিল।

মেসি চলে যাওয়ার পর ফ্যানদের রাগ ফেটে পড়ল – বোতল-চেয়ার ছোড়াছুড়ি, ভাঙচুর!
মেসি চলে যেতেই ফ্যানদের রাগ উথলে উঠল। বোতল, পানির প্যাকেট, চেয়ার ছুড়তে শুরু করলেন। কেউ কেউ মাঠে নেমে সেটআপ আর ক্যানোপি ভাঙচুর করলেন। স্ট্যান্ডের চেয়ার ভেঙে ফেলা হলো, গোটা স্টেডিয়ামে বু চিৎকার।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও ভাইরাল – ফ্যানরা সিট ভেঙে, ব্যানার ছিঁড়ে, অফিসিয়াল আর পুলিশের দিকে জিনিস ছুড়ছেন। ফ্যানরা বলছেন, মেসি মাত্র ১০-১৫ মিনিট ছিলেন, ঠিকমতো দেখতেও পাননি – তার ওপর আয়োজন ছিল একদম বাজে।
ক্রিকেট দুনিয়ার প্রতিক্রিয়া:

“বাংলার খেলা মন্ত্রীকে নিজের লোক ঢোকানোর দরকার কী ছিল? ভারতে বড় ইভেন্টের সর্বনাশ কেন হয়?” – অভিষেক ত্রিপাঠী
“কেউ লজ্জা পাচ্ছে না। এটা ছিল মেসি উইথ ওয়াই। ১০ হাজার টাকা দিয়ে মেসির মুখ দেখতে পেল না। মাত্র ২২ মিনিট টার্ফে ছিলেন, আর খেলা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ইভেন্ট হাইজ্যাক করলেন।

“সল্টলেকে পুরো বিশৃঙ্খলা, ফ্যানরা রাগে ফেটে পড়ছে” – অংশুমান রায়
“রাগী ফ্যানরা বোতল-চেয়ার ছুড়ছে কলকাতার সল্টলেকে” – মুফাদ্দল ভোহরা, তনুজ সিং
“মাসের পর মাস প্ল্যান, সেভিংস খরচ, ভোরে উঠে লাইনে দাঁড়ানো – আর এটা হলো। ফ্যানদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।” – অঙ্কন কর
“গ্রাউন্ড থেকে যারা খবর দিচ্ছে, সবাই এক কথা বলছে – এই ইভেন্ট ফ্যানদের জন্য নয়।” – লাভণ্য নারায়ণন

“সতাদ্রু দত্ত আর আয়োজকরা, তোমরা স্বর্গ দেখবে না। ফ্যানদের আবেগ নিয়ে খেলেছ, দামি টিকিটে ঠকিয়েছ – মেসির মুখও দেখতে দাওনি। লজ্জা!” – সোহম
মেসি চলে যাওয়ার সময়ও ভিড়ের চাপে অস্বস্তিতে পড়েন সুয়ারেজ আর ডি পলের সঙ্গে। অল্প সময়ে মেসি ফ্যানদের অভিবাদন জানান, মোহনবাগানের অফিসিয়াল শ্রীঞ্জয় বোসের সঙ্গে দেখা করেন, তার কোটে সই করেন। খেলা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও উপস্থিত ছিলেন।
এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস রাজ্য সরকারের কাছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। স্টেডিয়ামের বিশৃঙ্খলা আর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে – ক্রাউড কন্ট্রোল আর প্ল্যানিং নিয়ে।

 

news