দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈশাখের তীব্র গরমে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে চিকিৎসক সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মীরা।

দিনাজপুরের সীমান্তবর্তী হাকিমপুর উপজেলায় বৈশাখের তীব্র তাপদাহে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত ১৫ দিনে প্রতিদিন ৭০-৮০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে দেখা গেছে, ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ৬০ জন রোগী ভর্তি। বেডের অভাবে অনেকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বহির্বিভাগে একদিনে ৩৪৬ জন চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন, যার মধ্যে ১৭৩ জন নারী ও ৬৩ জন শিশু।

হাসপাতালের নার্স মাহফুজা খাতুন জানান, সাধারণত প্রতিদিন ৩-৪ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হতেন, কিন্তু গত কয়েক দিনে এ সংখ্যা বেড়ে ৮-১০ জনে দাঁড়িয়েছে। শিশু ও বয়স্করা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, তীব্র গরম ও আবহাওয়ার পরিবর্তন এর জন্য দায়ী। চিকিৎসকরা স্যালাইন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। তবে ১৩ জন চিকিৎসকের জায়গায় মাত্র ২ জন চিকিৎসক থাকায় সেবা প্রদানে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছেন তারা।

ভর্তি রোগী হাসনা বেগম বলেন, “আমার ছেলের বমি ও ডায়রিয়া হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। বেড না পেয়ে মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছি। এখন অনেকটা সুস্থ।” আরেক রোগী জানান, “গরমে ধান কাটার কাজ করতে গিয়ে পেটে ব্যথা ও ডায়রিয়া হয়। স্যালাইন ও চিকিৎসার পর সুস্থ হচ্ছি।” এক শিশুর অভিভাবক বলেন, “শ্বাসকষ্টের সমস্যায় আমরা ভর্তি হয়েছি। চিকিৎসার পর এখন সুস্থ।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ বলেন, “তীব্র গরম ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। কলেরা স্যালাইন পর্যাপ্ত থাকায় চিকিৎসায় সমস্যা হচ্ছে না। তবে চিকিৎসক সংকটের কারণে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

তীব্র গরমে হাকিমপুরে স্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে চিকিৎসক ও বেড সংকট দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

news